ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ

হিংসার আগুনে জ্বলছে গাড়ি, আগরতলায়। ছবি: সংগৃহীত
হিংসার আগুনে জ্বলছে গাড়ি, আগরতলায়। ছবি: সংগৃহীত

ত্রিপুরায় লোকসভার দুটি আসনেই নিজেদের জয়ের উল্লাসে বিজেপি ব্যাপক সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আজ শনিবার এমনই অভিযোগ করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির পাল্টা দাবি, জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিরোধীরা এখন রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে।

মাত্র ১৪ মাস আগে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিপিএম সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো ত্রিপুরাতেও দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রায় মুছে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস কোনো আসন পায়নি। ভোটের হার দাঁড়িয়েছি ১ দশমিক ৮ শতাংশ। এবার সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে একটি কেন্দ্রে ২৪ দশমিক ১৮ এবং অন্যটিতে ২৬ দশমিক ৫৮। ২০১৮-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টির মধ্যে একটি আসনে জিততে না পারলেও এবার তারা ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে।

অন্যদিকে প্রাপ্ত ভোটের হারে দেখা যাচ্ছে, বামেরা গত বিধানসভা নির্বাচনে ১৬টি আসনে জিতলেও এবার সব কটি কেন্দ্রেই তারা পিছিয়ে ছিল। ভোটের হারও ৪২ দশমিক ৭ থেকে কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৫১ ও ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

বিজেপির অবশ্য ভোটের হার আরও বেড়েছে। ৪৩ শতাংশ থেকে বেড়ে এবার পেয়েছে ৫১ দশমিক ৭৭, ৪৬ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট। সেই সঙ্গে ৫১টি বিধানসভা কেন্দ্রেই তারা টেক্কা দিয়েছে বিরোধীদের।

টানা ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মানিক সরকার। এখন তিনি বিরোধী দলনেতা। এবারের ভোটে মানিক সরকারের নিজের বিধানসভা আসন ধনপুরেও সিপিএম ছিল তৃতীয় স্থানে। কংগ্রেস এই কেন্দ্রে উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে।

বিরোধীদের কাছে ভোটের ফল বিশ্লেষণের থেকেও এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ। গোটা রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস চলছে বলে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা অভিযোগ করছেন।

প্রদেশ কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি বীরজিৎ সিনহা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মাত্র ১৪ মাসেই বিজেপি সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে। অবাধ ভোট হলে কংগ্রেসই দুটি আসনে জিতত। এটা বুঝতে পেরেই শাসক দল সন্ত্রাস শুরু করেছে।

প্রায় একই অভিযোগ সিপিএমেরও। দলের বর্ষীয়ান নেতা পবিত্র কর প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাপক সন্ত্রাস চলছে। ভোটেও সন্ত্রাস করেছে বিজেপি। এখন ভোটের ফল বের হতেই আরও বেশি সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছে তারা। পুলিশ ও প্রশাসন নীরব দর্শক।

তবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের দুই জয়ী প্রার্থী প্রতিমা ভৌমিক ও রেবতি মোহন ত্রিপুরাকে নিয়ে গতকাল শুক্রবারই দিল্লিতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব।

আজ দিল্লি থেকে প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মানুষ কংগ্রেস ও সিপিএমকে প্রত্যাখ্যান করেছে। নিজেদের না শুধরে ওরা এখন রাজ্যের বদনাম করার চক্রান্তে লিপ্ত। এর সাজা ফের পাবে দুই দলই।