রাহুলের পদত্যাগের ইচ্ছে, নাকচ করল দল

রাহুল গান্ধী । রয়টার্স ফাইল ছবি।
রাহুল গান্ধী । রয়টার্স ফাইল ছবি।

চিত্রনাট্য বরাবর এভাবেই লেখা হয়েছে। ভোট-বিপর্যয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতিরা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, ওয়ার্কিং কমিটি তা প্রত্যাখ্যান করবে। অতীতে বারবার যা হয়েছে আজ শনিবারও ঠিক তেমনই হলো। চেনা চিত্রনাট্য অনুযায়ী খারাপ ফলের যাবতীয় দায় ঘাড়ে নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। ইচ্ছা প্রকাশ মাত্র কমিটি সমস্বরে তা খারিজ করে দিল। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির শনিবাসরীয় বৈঠকের নির্যাস এটুকুই।

বৈঠক বসেছিল আজ বেলা সোয়া এগারোটায়। ঘণ্টা দেড়েক আলোচনার পর কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরযেওয়ালা সাংবাদিকদের জানান, দলের বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে রাহুল সরে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটির সব সদস্য একযোগে তাঁকে ওই সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ করেন।

বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী রাহুল বৈঠকে বলেন, আমাদের এই লড়াই ছিল আদর্শের। সেই লড়াই আমরা সাধ্যমতো লড়েছি। কিন্তু সফল হইনি। ব্যর্থতার এই দায় আমার। আমি তাই পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছি। কংগ্রেসের সভাপতি গান্ধী পরিবার থেকেই হতে হবে তার কোনো মানে নেই। কিন্তু আদর্শের লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।

রাহুলের এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই ওয়ার্কিং কমিটির সব সদস্য একযোগে তাঁকে বলেন, ইস্তফা সমাধান সূত্র নয়। তাঁকে আরও দক্ষতার সঙ্গে দল পরিচালনা করতে হবে। সদস্যরা বলেন, দলে তাঁর বিকল্প নেই। কংগ্রেস মুখপাত্র জানান, দলকে ঢেলে সাজার দায়িত্বও কমিটি তাঁকে দিয়েছে। এই বিষয়ে কমিটির বৈঠকে একটি প্রস্তাবও পাশ করানো হয়।

পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪ আসন। এবার ৮টি আসন বেড়ে হয়েছে ৫২। পাঁচ বছর আগেও কংগ্রেস লোকসভায় বিরোধী নেতার মর্যাদা পায়নি। এবারেও পাচ্ছে না প্রয়োজনের তুলনায় ৩টি আসন কম পাওয়ায়। বৈঠকের পর প্রবীণ নেতা বীরাপ্পা মইলি বলেন, এই ফল দল আশা করেনি।

রাহুলের ইস্তফার ইচ্ছা অগ্রাহ্য হলেও কীভাবে তিনি দলকে গুছিয়ে তুলবেন তার কোনো ইঙ্গিত এখনো নেই। রাহুলকে বলা হয়েছে, নিজের পছন্দ অনুযায়ী দল গড়ে তুলতে। উত্তর প্রদেশের দলীয় সভাপতি রাজ বব্বর ও ওড়িশার নিরঞ্জন পট্টনায়েক ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। তাঁদের রাখা হবে না অন্য কেউ নিযুক্ত হবেন আজ তা জানা যায়নি।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিং, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেস শাসিত সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এবং রাজ্য সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ বিজেপি ও এনডিএর শরিকেরা দিল্লি চলে আসেন। বিকেলে জোটের নেতা নির্বাচিত হন নরেন্দ্র মোদি। আগামী ৩০ মে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর শপথ গ্রহণের কথা।