খাসোগিকে হত্যার পর সৌদিতে মার্কিন সহায়তা বেড়েছে

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর থেকে সৌদি আরবের প্রতি সহযোগিতা বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সৌদি আরবের সঙ্গে স্পর্শকাতর পারমাণবিক শক্তিসংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে আইনপ্রণেতার পক্ষ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গেল বছরে বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি ছিল সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড। সৌদি আরব থেকে ১৫ সদস্যদের দল উড়ে গিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে গত ২ অক্টোবর তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে। ২০১৭ সালের জুনে যুবরাজ মোহাম্মদ ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর কড়া সমালোচক হিসেবে খাসোগি তাঁর রোষানলে পড়েন। দুর্নীতিবিরোধী ও ভিন্নমত দমনের অভিযানে ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে নিজেকে বাঁচাতে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে যান একসময়ের রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি জামাল খাসোগি।

ভার্জিনিয়ার সিনেটর ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য টিম কেইন বলেন, সৌদি আরবের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি বিরক্তিকর আচরণের মতো। যে সময়ে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা জঘন্য। খাসোগিকে হত্যার ১৬ দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ পারমাণবিক শক্তিসংক্রান্ত বিষয়ে অনুমোদন দেয়।

খাসোগি হত্যা সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এর দায়দায়িত্ব সৌদি সরকারের উচ্চপর্যায়ের। তবে রিয়াদের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।

সৌদি আরব পারমাণবিক কর্মসূচিতে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানিকে পারমাণবিক শক্তিপ্রযুক্তি বিক্রি ও সহযোগিতার জন্য সাতটি বিষয়ে গোপন অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে দুটি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের বিষয়টিও রয়েছে। অনুমোদনের বিষয়টি ‘পার্ট ৮১০ অথোরাইজেশন’ নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে কোনো চুক্তির আগে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাথমিক কাজ করার অনুমতি পাবে। যেসব কোম্পানি অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে তাদের পরিচয় গোপন রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয় ‘পার্ট ৮১০ অথোরাইজেশন’-এর বিষয়গুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখত।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। সৌদির জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বেসামরিক ও শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে ব্যবহার করা যায়।

তবে সিনেটর কেইন বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন সৌদিকে অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলে বিপজ্জনক পর্যায়ে উদ্বেগ বাড়াবে।