সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে বোমা বানাতে ট্রাম্পের অনুমোদন, কংগ্রেস সদস্যদের ক্ষোভ

সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে নতুন ধরনের একটি বোমা বানাতে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অনুমোদন অনুযায়ী একটি বিশেষ ধরনের উন্নত বোমার কিছু অংশ তৈরি হবে সৌদি আরবে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এর ফলে ওই উন্নত বোমা তৈরির প্রযুক্তি সৌদি আরবের হাতে চলে যাবে এবং ইয়েমেন যুদ্ধে তা ব্যবহারও করতে পারে দেশটি।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে জরুরি ভিত্তিতে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টিতে অনুমোদন দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। সেই অনুমোদনেই বলা হয় যে, মার্কিন রেথিওন কোম্পানি সৌদি আরবের সঙ্গে মিলে উচ্চপ্রযুক্তির বোমা তৈরি করবে। সৌদি আরবে মূলত ওই বোমার কিছু অংশ তৈরি হবে।

তবে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির এই প্রস্তাব আগে মার্কিন কংগ্রেসে তোলা হয়েছিল। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল কংগ্রেস। পরে জরুরি ভিত্তিতে তাতে অনুমোদন দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য। তাঁরা বলেছেন, এই অনুমোদনের প্রতি অনাস্থা প্রদর্শন করা হবে।

সমালোচকেরা বলছেন, এর ফলে সৌদি আরবের হাতে চলে যেতে পারে উন্নত মার্কিন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মতো করে বোমাও তৈরি করতে পারে সৌদি আরব। পরে সেই বোমা ব্যবহার করা হতে পারে ইয়েমেন যুদ্ধে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এভাবে ইয়েমেন যুদ্ধ আরও প্রলম্বিত করতে পারে সৌদি আরব।

অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস। রেথিওন কোম্পানির একজন মুখপাত্র বলেছেন, দশকের পর দশক ধরে এভাবে অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। সৌদি আরবের ক্ষেত্রেও তা নতুন কিছু নয়। একটি নির্দিষ্ট আইনের আওতায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং সব ধরনের বিধি-নিষেধ মেনে চলা হবে।

২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকেই ইয়েমেনে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে সৌদি আরব। এই যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে মানবিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ বলে অভিহিত করেছে। যুদ্ধের ফলে ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে কলেরা। ফলে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হচ্ছে বলে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের হাতে নতুন প্রযুক্তির অস্ত্র পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর থেকেই সৌদি আরবের প্রতি সহযোগিতা বাড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি আরবের সঙ্গে স্পর্শকাতর পারমাণবিক শক্তিসংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে আইনপ্রণেতার পক্ষ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে। এরই মধ্যে এলো সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা বানানোর খবর।