ভারতের সাংবাদিক কানোজিয়াকে মুক্তির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের পুলিশ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের পুলিশ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ টুইটের অভিযোগে ধৃত সাংবাদিককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেন, মামলা চলতে পারে। কিন্তু তার জন্য অভিযুক্তকে ১১ দিন জেলে রাখা অর্থহীন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অজয় রাস্তোগির অবকাশকালীন এজলাস এই নির্দেশ দিয়ে বলেন, অভিযুক্ত যা টুইট করেছেন তাঁরা তা অনুমোদন করছেন না। কিন্তু সেই কারণে অভিযুক্তকে জেলবন্দী করে রাখার প্রয়োজন নেই। বিচারপতিরা বলেন, ‘আমরা এমন এক দেশের নাগরিক যেখানে একটা সংবিধান আছে। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু তাঁকে জেলে রাখার দরকার নেই। স্বাধীনতার অধিকার মৌলিক অধিকার। এই অধিকার প্রশ্নাতীত।’

ধৃত সাংবাদিকের নাম প্রশান্ত কানোজিয়া। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে দাবি জানিয়ে এক নারী সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি দেন। সেই ক্লিপিং ভাইরাল হয়। প্রশান্ত সেই ক্লিপিং নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লাগিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ জন্য তাঁকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে গ্রেপ্তার। একই ধরনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় আরও চারজনকে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন এক নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিকেরাও। সেই চ্যানেল বেআইনিভাবে চলছিল বলে রাজ্য পুলিশ তা বন্ধও করে দিয়েছে। প্রশান্তকে ১১ দিন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। সেই গ্রেপ্তারি চ্যালেঞ্জ করে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হাজির হন তাঁর স্ত্রী জাগিশা অরোরা। প্রতিবাদ জানান সংবাদ মহল ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে এডিটর্স গিল্ড ‘স্বৈরাচারী ও আইনের অপব্যবহার’ বলে অভিহিত করেন।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানার পর জাগিশা অরোরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি খুশি। দেশের সংবিধানের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে।’
সভাপতিত্বের প্রশ্ন অমীমাংসিত থাকলেও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই ক্ষেত্রে চুপ থাকেননি। আজ এক টুইটে তিনি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, অবিলম্বে ওই সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়া হোক। রাহুল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আরএসএস ও বিজেপির মিথ্যা প্রচার যাঁরা করে চলেছেন, যাঁরা ভুয়া খবর প্রচার করছেন, তাঁদের সবাইকে ধরা হলে বেশির ভাগ খবরের কাগজ ও নিউজ চ্যানেল কর্মী সংকটে পড়বে। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বোকার মতো কাজ করছেন। ধৃত সাংবাদিকদের অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হোক।’