মমতা ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়টার্স ফাইল ছবি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়টার্স ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘুষের টাকা ফেরতের রাজনীতিতে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হয়েছে ঘুষের টাকা ফেরতের আন্দোলন। যেসব নেতা সরকারি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই এই আন্দোলন। এ আন্দোলনের জেরে এক কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৃণমূলের এক নেতাকে। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূল।

তৃণমূলর নেতারা বলেছেন, ঘুষ ফেরতের নির্দেশ মমতা প্রকাশ্যে না দিলে ভালো হতো। এতে দলের হিতের বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তৃণমূলের সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, যাঁরা কাটমানি নেন, তাঁরা চাপে পড়লেও এভাবে এটি বন্ধ করা যাবে না। এতে চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালদের কি শোধরানো যাবে? এবার যাঁরা কাটমানি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে মানুষ চড়াও হতে পারে। এতে অশান্তি ও হিংসা বাড়বে। দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার জন্য দলীয় নেত্রী শুদ্ধীকরণে ব্রতী হলেও কার্যত দলকে অস্বস্তিতে ফেলা হয়েছে।

শতাব্দী রায় বলেছেন, কাটমানি কেউ একা খান না। বেশির ভাগ সময়ে তার ভাগ অন্যরাও পান। কিন্তু যাঁরা কম হারে কাটমানি পান এবং চিহ্নিত, তাঁরা ধরা পড়লেও বেশি কাটমানি খাওয়াদের কী হবে? কাটমানির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হলে দলেরই ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। মানুষও দলের শীর্ষ নেতাদের দিকে আঙুল তুলবে। একজন সাংসদ হিসেবে তা মোটেই ভালো লাগেনি। এতে অহেতুক বিজেপির হাতেই সমালোচনার অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গের ১২৫টি পৌরসভার প্রায় ৩ হাজার দলীয় চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের এক সভায় ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে তিনি ঘোষণা দেন, ‘যাঁরা কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন, তাঁরা অবিলম্বে সেই টাকা দেন। নইলে দুর্নীতি দমন শাখা মাঠে নামবে।’ এ ঘোষণার পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে ঘুষের টাকা ফেরত পাওয়ার আন্দোলন। এ আন্দোলনে কার্যত সুবিধা পেয়ে গেছে বিজেপি।

বিজেপি বলছে, এবার মমতা তাঁর দলের দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছেন। মমতার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের কথা জনগণ দেখেছে। দলের শুদ্ধি অভিযান করতে গিয়ে নিজেই আটকে গেলেন মমতা।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা ও কংগ্রেসদলীয় বিধায়ক আব্দুল মান্নান বলেছেন, মমতা তাঁর দলের সবচেয়ে বড় চাঁদাবাজ। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং তাঁর আঁকা ছবি বিক্রির নামে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন, যার কোনো হিসাব নেই। ব্যবসায়ীদের কাছে জোর করে তিনি তাঁর আঁকা ছবি বিক্রি করেছেন। এখন সেসব কথা ভুলে তিনি কাউন্সিলরদের ধমকাচ্ছেন।