বান্ধবী-কাণ্ড এড়িয়ে গেলেন বরিস জনসন

বরিস জনসন। ছবি: এএফপি
বরিস জনসন। ছবি: এএফপি

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের চূড়ান্ত দুই প্রার্থী গত শনিবার দলীয় নেতা–কর্মীদের সামনে হাজির হন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্যতা প্রমাণে ব্রেক্সিটসহ দেশের নানা বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন। কিন্তু সব ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকল বরিস জনসনের বান্ধবী–কাণ্ড।

বিতর্কে বান্ধবীর সঙ্গে ঝগড়ার বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যান জনসন, যা আরও সমালোচনার রসদ জুগিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বান্ধবী ক্যারি সিমন্ডসের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয় জনসনের। সেই ঝগড়ার অডিও ধারণ করে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন এক প্রতিবেশী। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কিন্তু মুখ খুলছেন না জনসন।

ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ওই বিতর্কে (হাস্টিং) দুই প্রার্থী—সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট আলাদা সময়ে মঞ্চে আসেন। হলভর্তি দলীয় নেতা–কর্মীদের সামনে প্রার্থীদের প্রশ্ন করেন সাংবাদিক ইয়ান ডেইল। তিনি জনসনের কাছে শুরুতেই জানতে চান, বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় পুলিশ কেন গিয়েছিল? জনসন স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে সেই প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি লোকজন সেটি জানতে চায় না।’ জনসন প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে বলে অভিযোগ করেন উপস্থাপক। জবাবে জনসন বলেন, ‘আমি দেশের জন্য কী করব, লোকজন সেসব নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার রাখে।’ নাছোড়বান্দা উপস্থাপক এবার প্রশ্ন ছোড়েন, ব্যক্তিগত জীবন প্রধানমন্ত্রীর সক্ষমতায় প্রভাব ফেলে কি না? এবার মিলনায়তনে হাজির জনসনের সমর্থকেরা চিৎকার করে উপস্থাপককে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। জনসন উপস্থাপকের পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘এই মহান মানুষটিকে তিরস্কার করবেন না।’ এভাবে বারবার চাপাচাপি করেও বান্ধবী–কাণ্ড নিয়ে জনসনের মুখ খোলা গেল না। তবে দিন শেষে বিতর্কের ওই অংশটুকুই আলোচনা সরগরম করে রাখল।

ব্রেক্সিটসহ নানা বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেছেন দুই প্রার্থী। জনসন বলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি যা প্রতিশ্রুতি দেন, সবই রক্ষা করেন। লন্ডনের মেয়র হিসেবে দুই দফা দায়িত্ব পালনকালে তিনি সেটি প্রমাণ করেছেন। ৩১ অক্টোবরে ব্রেক্সিট কার্যকর করার জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। অন্যদিকে বরিস জনসনের কথায় ভরসা করা ভুল হবে বলে ইঙ্গিত করেন প্রতিদ্বন্দ্বী জেরেমি হান্ট। তিনি বলেন, ‘আপনারা ভুল মানুষকে নির্বাচিত করবেন না। তাহলে কনজারভেটিভ দল কেবল ক্ষমতা হারাবে না, বরং রাজনীতির ময়দানে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।’ হান্ট বলেন, ভালো চুক্তির সম্ভাবনা না থাকলে তবেই তিনি চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের পথে হাঁটবেন।

এদিকে বান্ধবীর সঙ্গে জনসনের ঝগড়ার খবর ফাঁস করে দেওয়া ওই প্রতিবেশী গতকাল রোববার বিবৃতি দিয়ে আলোচনা আরও জমিয়ে দিয়েছেন। ২৯ বছর বয়সী টম পেন বলেন, প্রতিবেশীর নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি ওই ঝগড়ার অডিও ধারণ করেন। অন্য কেউ হলেও তা–ই করত। আর ‘দ্য গার্ডিয়ান’–এর হাতে ওই রেকর্ড তুলে দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে পেন বলেন, বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ। যে লোকটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান তাঁর প্রতিটি শব্দ, কাজ এবং আচরণ নিয়ে জবাবদিহি হওয়া উচিত। ২০১৬ সালের গণভোটে পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানান। তবে রাজনীতির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা ওই ভোট দেওয়া পর্যন্তই।