উপসাগরীয় মিত্রদের এক করছে যুক্তরাষ্ট্র

জেদ্দায় সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পম্পেও। ছবি: রয়টার্স
জেদ্দায় সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পম্পেও। ছবি: রয়টার্স

ইরান ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ে ধনাঢ্য উপসাগরীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। মার্কিন ড্রোন হামলার জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিসহ দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনার পর গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সঙ্গে বৈঠক করেন পম্পেও।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় নৌবহরের ওপর নজরদারির জন্য সহযোগীদের সঙ্গে একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি এ এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা ও ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন।

সৌদি আরবে পৌঁছে পম্পেও সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় উপসাগরীয় এলাকায় জাহাজের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

সৌদি আরবের জেদ্দা শহর থেকে এক টুইট বার্তায় পম্পেও জানান, নৌ চলাচলে সর্বাধিক স্বাধীনতা দেওয়া হবে।

আবুধাবিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে সক্রিয় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে প্রহরার ব্যবস্থা করছে মার্কিন নৌবাহিনী। তিনি বলেন, কয়েকটি দেশের জোট গঠিত হলে বস্তুগত এবং আর্থিক ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা মার্কিন ড্রোনে হামলা চালাচ্ছে, এ অঞ্চলের অন্যান্য ড্রোনে গুলি চালাচ্ছে, শুধু এ অঞ্চলেই নয়, যেকোনো জায়গায় হামলা চালাচ্ছে—এর প্রধান কারণ তারা চায় না আমরা তাদের ওপর নজরদারি করি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন আরেক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এ পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য ওমান উপসাগরীয় অঞ্চল বা হরমুজ প্রণালির অন্তর্বর্তীকালীন জায়গায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের অংশীদারদের বেশির ভাগ জাহাজ সরবরাহ করা। ওই এলাকায় নিজেদের নজরদারি বাড়াতে এ ধরনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

পুরো ব্যাপার বর্ণনা করে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখনো এমন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। মিত্রদের পক্ষ থেকে কী ধরনের সাড়া পাওয়া যায়, তার ওপর বাকিটা নির্ভর করছে।

আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পম্পেও। এ সময় হরমুজ প্রণালিতে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

পম্পেও বলেন, ‘আপনাদের সবার সহযোগিতা লাগবে আমাদের, আপনাদের সামরিক সহায়তা প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) এই দায় একা ঘাড়ে না নিয়ে মিত্রদের মধ্যে ভাগ করে নিতে আগ্রহী।’ সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং অন্যান্য ২০টি দেশের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন বলে জানান তিনি।

হরমুজ প্রণালিতে সৌদি মালিকানাধীন দুটিসহ মোট ছয়টি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার দায় অস্বীকার করেছে তেহরান। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যামেরা, দুরবিন এবং মার্কিন জাহাজও নজরদারির আওতাভুক্ত থাকবে।