আসামে আরও লক্ষাধিক মানুষের নাগরিকত্ব সংকট

আসামে বুধবার এনআরসির অতিরিক্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
আসামে বুধবার এনআরসির অতিরিক্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আসামের ১ লাখেরও বেশি মানুষ ফের নাগরিকত্ব হারাতে চলেছেন। এর আগে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বুধবার এনআরসির (রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জি) অতিরিক্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, বাঙালিদের নামই বাদ পড়েছে বেশি।

২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এনআরসির প্রাথমিক খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও আসামে অনেকের নাগরিকত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বুধবার প্রকাশিত অতিরিক্ত খসড়া তালিকায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৬২ জনের নাম পাওয়া যায়নি। কিন্তু গত বছর প্রকাশিত চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় এঁদের সবার নাম ছিল। এখন নতুন করে তাঁদের ফের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। বাদ পড়াদের প্রত্যেকের বাড়িতেই যাচ্ছে নোটিশ। আগামী ১১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁদের এনআরসি কেন্দ্রে হাজির হয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪টি আবেদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৭ জনের নাম ছিল। অর্থাৎ চূড়ান্ত খসড়াতেই বাদ পড়ে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম।

বুধবার আরও ১ লাখেরও বেশি নাম বাদ পড়ায় আসামে ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ হারাতে চলেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশিত হবে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। তবে এ দিন যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের সামনেও নতুন করে আবেদনের সুযোগ থাকছে। ১১ জুলাইয়ের মধ্যে এনআরসি সেবাকেন্দ্রে আবেদন করতে হবে।

এনআরসি সূত্র জানায়, চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও এদিন বাদ যায়, ঘোষিত বিদেশিদের পাশাপাশি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে তাঁদের নামও। এ ছাড়া সন্দেহভাজন ভোটারদের নামও বাদ পড়েছে তালিকা থেকে।

সমন পেয়েও যাঁরা এনআরসি কেন্দ্রে হাজিরা দেননি তাঁদের নামও বাদ গিয়েছে এই তালিকা থেকে। এ ছাড়া নথিপত্রে গড় মিল থাকাও নাম বাদ যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানানো হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল অবশ্য বলেছেন, বৈধ নাগরিকেরা সবাই ঠাঁই পাবে এনআরসি তালিকায়। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আসাম রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার অভিযোগ, এনআরসি কর্তৃপক্ষ নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। বাঙালি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের এনআরসির নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।