ভারতের ওপর নতুন চাপ ট্রাম্পের

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের আগে নতুন চাপ সৃষ্টি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ঠিক আগের দিন টুইট করে ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ভারত যে হারে শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, তা অসমর্থনীয়। ভারতকে অবশ্যই ওই বৃদ্ধি প্রত্যাহার করতে হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই কড়া মনোভাব নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্তব্য করেননি ভারত সরকারের কোনো মন্ত্রীও। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাপান চলে গেছেন। এই অবস্থায় ভারত কী করবে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মোদি কীভাবে ওই চাপ সামাল দেবেন, তা নিয়েই আপাতত জল্পনা চলছে।

টুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলতে আমি মুখিয়ে রয়েছি। ভারত অনেক বছর ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে শুল্ক বৃদ্ধি করে রেখেছে। সম্প্রতি সেই শুল্কহার আরও বাড়ানো হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। শুল্ক কমাতেই হবে।’

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্রমোন্নতি সত্ত্বেও কয়েকটি বিষয় গলার কাঁটার মতো খচখচ করছে। যেমন রাশিয়া থেকে ৫০০ কোটি ডলারে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি এবং শুল্ক বৃদ্ধি। কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা এত বোকা দেশ নই। ভারতকে দেখুন, বন্ধু দেশ। প্রধানমন্ত্রী মোদি এত ভালো বন্ধু। কিন্তু কী করেছেন! মোটরসাইকেলের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছেন। অথচ আমরা এক পয়সাও শুল্ক নিই না।’ ওই সাক্ষাৎকারের পর শুল্কহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ট্রাম্প বলেছেন, তা সত্ত্বেও ওই হার অযৌক্তিক।

জাপানের ওসাকায় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভারতে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। মোদি ও জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কঠোর মনোভাবের বিষয়টি পম্পেও উল্লেখ করেন। বৈঠকে দুই দেশই ‘জাতীয় স্বার্থের’ কথা উল্লেখ করেছেন। পম্পেওর সঙ্গে বৈঠকে ভারত এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি যাতে মনে হয়, শীর্ষ সম্মেলনের আসরে মোদি নমনীয় হবেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের মতে, সেই কারণে পম্পেওর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই ট্রাম্প ওই টুইট মারফত ভারতের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করলেন।

এস-৪০০ চুক্তির জন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে ভারত। ভারত সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় চাইছে। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানির ওপর ভারতকে কোনো শুল্ক দিতে হতো না। ১ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেই সুবিধা তুলে নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৫ জুন ভারতও ২৮টি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। ট্রাম্প ওই বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। টুইট মারফত চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যও তা-ই।