প্রথম দিনে ডিজিটাল অর্থনীতিসংক্রান্ত ওসাকা ঘোষণা গ্রহণ

জাপানের ওসাকা শহরের কৃত্রিম দ্বীপ সাকিশিমার ইনটেক্স সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুক্রবার শুরু হয়েছে বিশ্বের ২০টি প্রধান অর্থনীতির দেশের দুদিনের শীর্ষ সম্মেলন। ছবি: রয়টার্স
জাপানের ওসাকা শহরের কৃত্রিম দ্বীপ সাকিশিমার ইনটেক্স সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুক্রবার শুরু হয়েছে বিশ্বের ২০টি প্রধান অর্থনীতির দেশের দুদিনের শীর্ষ সম্মেলন। ছবি: রয়টার্স

জাপানের ওসাকা শহরের কৃত্রিম দ্বীপ সাকিশিমার ইনটেক্স সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে আজ শুরু হয়েছে বিশ্বের ২০টি প্রধান অর্থনীতির দেশের দুদিনের শীর্ষ সম্মেলন। আজ উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

ভাষণে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অর্থনীতির বিশ্বায়নের ফলে ঘটতে থাকা দ্রুত পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ ও অসন্তোষ কখনো কখনো সংরক্ষণবাদের প্রলোভনের দিকে ধাবিত হওয়ার ইন্ধন জুগিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যিক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি সবার জন্য ক্ষতিকর হয়ে দেখা দেবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী জি-২০ নেতাদের আরও বলেছেন, বাণিজ্য ও ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র হয়ে আসার মুখে তিনি চাইছেন বিশ্বের অগ্রসর অর্থনীতির দেশগুলো যেন প্রবৃদ্ধির বাস্তবায়নে সংঘাতের পথে না গিয়ে নীতিগত সব রকম উপায় কাজে লাগায়।

স্বাগতিক দেশের নেতার উদ্বোধনী ভাষণের পর ২৭টি দেশ ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধিরা বাণিজ্য ও ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনায় যোগ দেন। স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হওয়া প্রথম অধিবেশন প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে। বিকেলের দ্বিতীয় অধিবেশনে আরও বিস্তারিত আলোচনার পর নেতারা ডিজিটাল অর্থনীতিসংক্রান্ত ওসাকা ঘোষণা গ্রহণ করেন। ঘোষণায় ওসাকা ট্র্যাক বা চলার পথের যে ধারণা জাপানের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে উপাত্তের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং এ-সংক্রান্ত নিয়মাবলি ঠিক করে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

উভয় অধিবেশনে চলা আলোচনার সারসংক্ষেপ পরে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস সেক্রেটারি তাকেশি ওসুদা। প্রথম অধিবেশনে ১৬টি দেশ বক্তব্য রাখার পর জাপানি প্রধানমন্ত্রী আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে অধিবেশনের সমাপ্তি টানেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে জি ২০-এর চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করা উচিত। আলোচনার বিষয়বস্তু সেদিকে কেন্দ্রীভূত থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তবে ওসাকা ঘোষণায় ভারত অংশ নেয়নি এবং আলোচনায় অংশ নিয়েও ইন্দোনেশিয়া, মিসর ও দক্ষিণ আফ্রিকা ঘোষণায় স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকে। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ না করলেও জানিয়েছেন, প্রতিটি দেশ নিজস্ব অবস্থান থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়।

আজকের দুই অধিবেশনে কয়েকটি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি উত্থাপন করলেও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। আগামীকালের অধিবেশনে সমুদ্রের প্লাস্টিক-দূষণ ও পরিবেশ সমস্যার অন্যান্য দিকের ওপর আলোকপাত করা হবে এবং পরে সম্মেলনের সভাপতির (জাপানের প্রধানমন্ত্রী) সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুই দিনের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন।

শুক্রবার জি-২০ জোটের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক বৈঠকে মিলিত হন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। জাপান সফর শুরু করার অল্প আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা মৈত্রী নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈরী মন্তব্যকে পাশ কাটিয়ে গেছেন শিনজো আবে। বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার পর জাপান সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, দুই দেশের নেতাদের মধ্যে ৩৫ মিনিট ধরে চলা আলোচনায় আবে বিষয়টি উত্থাপন করা থেকে বিরত ছিলেন এবং দুই নেতা সেখানে তাঁদের দুই দেশের মধ্যকার সুদৃঢ় দ্বিপক্ষীয় জোট আরও জোরদার করতে একমত হয়েছেন।