ইন্দোনেশিয়ায় শীর্ষ জঙ্গি নেতা গ্রেপ্তার

আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠন জেমাহ ইসলামিয়ার (জেআই) শীর্ষ নেতা পারা বিজয়ান্তকে গ্রেপ্তার করেছে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ। নতুন সদস্য ভিড়িয়ে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে প্রশিক্ষণে তাদের সিরিয়ায় পাঠানোর বিষয়ে তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। গত শনিবার রাজধানী জাকার্তার সীমান্ত অঞ্চল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলেও তৎক্ষণাৎ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আটক জঙ্গিকে বিজয়ান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ।

বিজয়ান্তের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ। ২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ বালিতে বোমা হামলায় অন্তত ২০০ জন নিহত হয়। এ হামলার হোতা হিসেবে পারা বিজয়ান্তকে শনাক্ত করা হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিজয়ান্ত আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক জেআইয়ের কারাবন্দী নেতা আবু বকর বশিরের শিষ্য।

২০০৩ সাল থেকে জেআইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন বিজয়ান্ত। দক্ষিণ ফিলিপাইনের জঙ্গিদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।

জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র দেদি প্রাসেতয়ো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা ও তাদের ‘খিলাফত’ রাষ্ট্রের স্বঘোষিত ‘খলিফা’ আবু বকর আল-বাগদাদির সমর্থক জেমাহ ইসলামিয়া ইন্দোনেশিয়ার জন্য হুমকি। তাদের প্রধান লক্ষ্য দেশটিতে আইএসের খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা।

২০০২ সালে বোমা হামলা ঘটনার পর ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ বাহিনী ডেনসাস ৮৮ গঠন করা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম-অধ্যুষিত দেশটি থেকে জেআই এবং তাদের মতো অন্যান্য সংগঠনকে পরাস্ত করাই ডেনসাস ৮৮–এর মূল কাজ। বশিরের মতো শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড দেওয়াসহ জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ছত্রভঙ্গ করে তারা। তবে সে সময় অনেক চিহ্নিত অপরাধী গা ঢাকা দেয়।

জাকার্তাভিত্তিক সন্ত্রাসবাদ বিশ্লেষক স্ট্যানিসলাউস রিয়ান্তা বলেন, এখনো অনেক জেআই সদস্য সক্রিয়। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর তারা গোপন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। আইএসের পতনের পর নতুন করে জেআইয়ের উত্থানে সময় লাগছে।

গত বছর সুরাবায়ার পূর্ব জাভা শহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়। এ ঘটনার পর সন্ত্রাসবিরোধী আইন আরও কঠোর করতে বাধ্য হয়েছে ইন্দোনেশিয়া। ২০১৯ সালের শুরু থেকে শতাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া আইএসকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিলেও সংগঠনটিকে সমর্থনের জন্য কারও বিচার করার আইনি ভিত্তি তৈরি করা হয়নি।