অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন এখন মৃত: ল্যাম

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইনকে অকার্যকর ঘোষণা করেছেন হংকংয়ের নেতা ক্যারি ল্যাম। ছবি: বিবিসি।
বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইনকে অকার্যকর ঘোষণা করেছেন হংকংয়ের নেতা ক্যারি ল্যাম। ছবি: বিবিসি।

হংকংয়ের বেইজিংপন্থী নেতা ক্যারি ল্যাম বলেছেন, অপরাধী প্রত্যর্পণ আইনটি বর্তমানে কার্যকর নয়। আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা যায়, চীন চাইলে সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে—বিতর্কিত এ আইনকে ‘মৃত’ বলেছেন ল্যাম। তবে আন্দোলনকারীরা এই প্রস্তাব বাতিল করার দাবি জানালে ল্যাম এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।

বিতর্কিত এ আইন নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র। মাসব্যাপী চলমান এই বিক্ষোভের জের ধরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে গোটা হংকংয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে ল্যাম বলেন, ‘সরকারের আন্তরিকতা বা উদ্বেগ নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। আইনসভা কাউন্সিলের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার আবারও এ প্রক্রিয়া চালু করবে কি না, তাও নিশ্চিত নয়। কাজেই আমি বলছি, এই বিল এখন মৃত।’

বর্তমানে স্থগিত থাকা আইনটি নিয়ে মিছিলের পর মিছিল বের করছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গণতন্ত্র পুনর্গঠনের দাবিতে আরও বড় পরিসরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আধা স্বায়ত্তশাসিত এলাকাটিতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ স্বাধীনতার জন্য লড়ছে হংকংয়ের নাগরিকেরা।

১ জুলাই আইনসভা কাউন্সিল (লেগকো) দখল করে রাখে কয়েকজন আন্দোলনকারী। তাদের সমর্থন দেয় উপস্থিত হাজারো জনতা। অনুপ্রবেশকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। রাবারের গুলির আঘাতে আহত হয় অনেকে। এতে জনতার ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে জনগণের সামনে খুব কমই এসেছেন ল্যাম। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ মন্তব্য প্রশংসিত হয়েছে। তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন প্রত্যর্পণ আইনকে ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থ’ প্রমাণ করতে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়াই আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়েছেন তিনি। হংকং যে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা অনুধাবন করে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

যে আইন নিয়ে এ আন্দোলন, সেখানে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে; বিশেষত যেসব অপরাধীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে। তবে হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, এ আইন নিয়ে এত দুর্ভাবনার কিছু নেই। কারণ, এ অপরাধী প্রত্যর্পণ অনুরোধে সাড়া দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি হংকংয়ের বিচার বিভাগই নেবে। এ আইনের ফলে চীনা বিচারব্যবস্থার অধীনে অন্যায্যভাবে আটক ও বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।