যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ

স্যার কিম ডারোচ। ছবি: এএফপি
স্যার কিম ডারোচ। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্যার কিম ডারোচ পদত্যাগ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে করা ই-মেইল বার্তা ফাঁসের জের ধরে আজ বুধবার তিনি পদত্যাগ করেছেন।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিম ডারোচের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে কিম ডারোচের ভাষ্য, তিনি পদত্যাগের মধ্য দিয়ে কিছু ‘বাজে সমালোচনার’ বিষয়ে ইতি টানতে চাচ্ছেন। কিমের দাবি, তিনি দায়িত্বের বাইরে কোনো কাজ করেননি।

এর আগে গত সোমবার কিম ডারোচের ফাঁস হওয়া গোপন নথির জের ধরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সমালোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এ বিষয়ে একাধিক টুইট করেন। ট্রাম্প সরাসরি বলেও দিয়েছেন, ওই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আর কাজ করবেন না। টুইট বার্তায় কিম ডারোচকে একজন ‘আহাম্মক’ ও ‘বোকার হদ্দ’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট বলছে, ট্রাম্পকে নয়, ডারোচের প্রতিই পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাদের।

গত মাসে ডারোচ ব্রিটিশ সরকারকে পাঠানো এক গোপন বার্তায় ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনকে ‘অদক্ষ’ ও ‘পুরোপুরি অকার্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করেন। গত রোববার ওই গোপন বার্তা ফাঁস হয়। এ ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ট্রাম্প বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে সোমবার সেই জায়গা থেকে সরে এসে ট্রাম্প টুইট করে বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রদূতকে চিনি না। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পরিচিতি ও সুনামও নেই। আমরা তাঁর সঙ্গে আর কাজ করব না। যুক্তরাজ্যের জন্য ভালো সংবাদ যে তারা শিগগিরই একজন নতুন ও ভালো প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে।’

যুক্তরাজ্যের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) বিষয়ে মের পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর উপদেশ মে অবজ্ঞা করেছেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প।

থেরেসা মের মুখপাত্র বলেছেন, ডারোচের মতামতের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সরকার ও মন্ত্রীদের ধারণার মিল নেই। ওই কূটনীতিকের প্রতি সমর্থন রয়েছে লন্ডনের। মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোপন নথি ফাঁসের অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি জানিয়েছি। আমরা তাদের জানিয়েছি, ফাঁসের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য।’

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের স্থলাভিষিক্ত হতে লড়ছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ওয়াশিংটন ও লন্ডনের দীর্ঘদিনের মিত্রতার সম্পর্কে হঠাৎ টানাপোড়েনের কথা স্বীকার করে সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাস্টন কার্টার বলেন, ‘এখন কেউ ভালো অবস্থায় নেই। এই অবস্থার চেয়ে নিজেদের সম্পর্কের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত আমাদের।’