যুক্তরাষ্ট্র-ইরান যুদ্ধের ঝুঁকি দেখছে ফ্রান্স

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়ঁ। ছবি: রয়টার্স
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়ঁ। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা যেকোনো সময় যুদ্ধে রূপ নেওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছে ফ্রান্স। ইরানের সঙ্গে হওয়া ছয় জাতি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়া এবং ওয়াশিংটনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত—উভয়কেই ‘বাজে’ আখ্যা দিয়ে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভ লু দ্রিয়ঁ।

বাস্তিল দিবস উপলক্ষে প্যারিসে সামরিক প্যারেডে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার সিদ্ধান্ত এবং এর যে প্রতিক্রিয়া তেহরান দেখাচ্ছে দুটিই বাজে, যা উত্তেজনাকে যুদ্ধে রূপান্তরের ঝুঁকি তৈরি করছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে বড় কোনো যুদ্ধের ঝুঁকি রয়েছে কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। উত্তেজনা বাড়লে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পরমাণু কর্মসূচি বিস্তৃতি রোধের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রতিশ্রুতি থেকে ইরানের সরে আসার সিদ্ধান্ত নতুন শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। এটি একটি বাজে সিদ্ধান্ত। এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে যে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তার একটি বাজে প্রতিক্রিয়া এটি।’

২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে হওয়া ছয় জাতি পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো হচ্ছে ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন। চুক্তিটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা ও ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্য দিয়ে নতুন করে যে উত্তেজনার শুরু, তা গত কয়েক মাসে আরও বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার অভিযোগ তোলে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। সর্বশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুদ্ধের একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল দুই দেশ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে সে পরিস্থিতি এড়ানো গেলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পথ থেকে ইরানকে ফেরানো যায়নি। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানই যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করছে বলে মনে করে ফ্রান্স।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউই যুদ্ধ চায় না। দেখা যাচ্ছে সবাই বলছে যে, তারা এমন উত্তেজনা চায় না। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা উপসাগরীয় অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ কেউই নন। কিন্তু উত্তেজনাকর উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে, যা আশঙ্কাজনক। পরমাণু কর্মসূচি-সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে ইরানের কোনো প্রাপ্তি ঘটেনি। ইরান পরমাণু অস্ত্রধারী হলে যুক্তরাষ্ট্রেরও কোনো প্রাপ্তি ঘটবে না। তাই উত্তেজনা প্রশমনে দরকারি পদক্ষেপ নেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।’