ইরানের বিষয়ে নতুন পদক্ষেপে যেতে চায় যুক্তরাজ্য

৪ জুলাই জিব্রালটার উপকূলে ইরানের তেল ট্যাংকার জব্দ করে যুক্তরাজ্য। ছবি: রয়টার্স
৪ জুলাই জিব্রালটার উপকূলে ইরানের তেল ট্যাংকার জব্দ করে যুক্তরাজ্য। ছবি: রয়টার্স

ইরানের পারমাণবিক চুক্তির অবসান করতে ও উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে নতুন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ইরান অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে—বিষয়টি তুলে ধরে আজ সোমবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়, ইরান তার স্পর্শকাতর পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করে আনবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের ঢুকতে দেবে। এর বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে গত বছর এই পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

এর মধ্যে ৪ জুলাই জিব্রালটার উপকূলে ইরানের তেল ট্যাংকার জব্দ করে যুক্তরাজ্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় থাকা সিরিয়ার একটি শোধনাগারের জন্য তেল নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহে ব্রিটিশ নৌবাহিনী গ্রেস ১ নামের ওই ট্যাংকার জব্দ করে। এতে এই বিষয়ে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে। গত শনিবার হান্ট বলেন, ট্যাংকারটি সিরিয়ায় যাবে না—এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে ইরানকে, তাহলে এটি ছেড়ে দেওয়া হবে।

আজ সোমবার এ বিষয়ে ব্রাসেলসে ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে বৈঠক করবেন হান্ট। এক যৌথ বিবৃতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জানায়, এই চুক্তির প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র–ইরান সম্পর্ক ও উপসাগরীয় অঞ্চলের উত্তেজনা তাদের মধ্য গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ওই বিবৃতিতে দেশগুলো জানায়, আমরা বিশ্বাস করি দায়িত্বশীল আচরণ করার এখন সময় এসেছে। এই উত্তেজনা কমাতে একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে।

ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্যোগে ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে ছয়টি শক্তিশালী দেশের একটি চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত একটি বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে রাখবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে বেশির ভাগ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ওঠানো হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর খোলাখুলি এই চুক্তির বিরোধিতা শুরু করেন এবং গত বছর একতরফাভাবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর ইরানের ওপর নতুন করে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেন তিনি। বলা হচ্ছে, পারমাণবিক চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের সীমা লঙ্ঘন করেছে ইরান। ২০১৫ সালে চুক্তিতে মজুতের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২০২ দশমিক ৮ কিলোগ্রাম।