মার্কিন কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি চীনের

মাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে যুক্ত মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি চীনের। ছবি: রয়টার্স
মাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে যুক্ত মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি চীনের। ছবি: রয়টার্স

তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে যুক্ত মার্কিন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে চীন। নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিলেও চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

আজ সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চীন সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলো সম্পর্ক ছেদ করবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত ও গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে বরাবরই চীন নিজের বলে দাবি করে এসেছে। তাইওয়ানকে চীন বরাবরই সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। এ কারণে এই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্কে চীন সরকার আপত্তি জানিয়ে আসছে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে তাইওয়ান ইস্যু আরও একবারের মতো সামনে চলে এসেছে। গত সপ্তাহে পেন্টাগন ঘোষণা দেয়, তারা তাইওয়ানের অনুরোধে তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি অনুমোদন করেছে। সর্বশেষ এ অস্ত্র বিক্রয় চুক্তি অনুযায়ী, তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২২০ কোটি ডলার মূল্যমানের ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্রসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম কিনছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবারই চীন তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে যুক্ত মার্কিন কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি জানায়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু তারা বলেনি।

আজ সোমবার আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, ‘এই অস্ত্র বিক্রি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং চীনের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। এর সঙ্গে যুক্ত মার্কিন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চীন সরকার ও এর কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের সহযোগিতা বা বাণিজ্য সম্পর্ক রাখবে না। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে আমি বিশ্বাস করি, চীনের মানুষ সব সময় তাদের কথা রাখে।’

এর আগে গতকাল রোববার চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপল’স ডেইলিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে চীনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে এমন কিছু মার্কিন কোম্পানির নাম উঠে আসে। এর মধ্যে রয়েছে হানিওয়েল ইন্টারন্যাশনাল ইনকরপোরেশন, যা আব্রামস ট্যাংকের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এই আব্রামস ট্যাংক তাইওয়ানকে সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ তালিকায় রয়েছে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গালফস্ট্রিম অ্যারোস্পেস, যা জেনারেল ডাইনামিকসের একটি প্রতিষ্ঠান। এ দুটি প্রতিষ্ঠানেরই গুরুত্বপূর্ণ বাজার চীন।

এ বিষয়ে হানিওয়েল ও জেনারেল ডাইনামিকসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।

এর আগেও চীন মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল। চীনের কাছ থেকে এ ধরনের ঘোষণা ২০১০ ও ২০১৫ সালে এসেছিল। দুবারই তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রিই ছিল এমন ঘোষণার পেছনে। কিন্তু ওই ঘোষণাগুলো শেষ পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।