জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ভাঙছে ইসরায়েল
জেরুজালেমের শহরতলিতে সামরিক বেড়ার কাছে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ–প্রতিরোধ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে উপেক্ষা করে আজ সোমবার ওই ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করে ইসরায়েল।
আজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত ইসরায়েলি সেনা ও পুলিশ বুলডোজার নিয়ে সুর বাহের গ্রামের ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করেছে। ফিলিস্তিনি এ গ্রাম পূর্ব জেরুজালেমের প্রান্তে। এলাকাটি ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল দখল করে নেয়।
ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, সামরিক বেড়ার কাছে বাড়িঘর ভেঙে ফেলার যে নজির স্থাপন করেছে ইসরায়েল, তা এখানেই থেমে যাবে না। হয়তো বেড়া থেকে শহরের দিকে যাওয়ার রুটেও এ ঘটনা ঘটতে থাকবে। রুটটি শত শত কিলোমিটারজুড়ে এবং ইসরায়েল–অধ্যুষিত পশ্চিম তীরের দিকে চলে গেছে।
জেরুজালেমকে পবিত্র ভূমি বলে মনে করে ফিলিস্তিনিরা। এখানে পাঁচ লাখ ইসরায়েলি ও তিন লাখ ফিলিস্তিনের বসবাস। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ জেরুজালেমকে ঘিরে দীর্ঘ বিবাদের বিষয়টিকে আরও জিইয়ে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট গত জুন মাসে এক আদেশে বলেছেন, ওই ভবনগুলো নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে বানানো হয়েছে। বাড়িঘরগুলো থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার সময়সীমা গত শুক্রবার শেষ হয়েছে।
তবে কিছু লোকজন বলছেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের কারণে তাঁরা গৃহহীন হয়ে যাবেন। ইসরায়েলের দখল করা পশ্চিম তীরের কিছু এলাকায় ফিলিস্তিনি শাসনে চলে। তাঁরা ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বাড়ি বানিয়েছিলেন বলে জানান।
হামাদা হামাদা নামের একজন কমিউনিটি নেতা বলেন, রাত দুইটা থেকে লোকজনকে জোর করে বাড়িঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইসরায়েলি বাহিনী বিস্ফোরক দ্রব্য পোঁতা শুরু করে।
সুর বাহের পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের মধ্যে অবস্থান করছে। ভৌগোলিক রাজনৈতিক অবস্থানের দিকে দিয়ে এটি খুব জটিল জায়গায়। এর কিছু অংশ ইসরায়েল–অধ্যুষিত পূর্ব জেরুজালেমের পৌরসীমার বাইরে, কিন্তু ইসরায়েলের সামরিক বেড়ার দিকে। এই অবস্থান সুর বাহেরকে পশ্চিম তীরের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিন স্বাধীনতা সংস্থা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি আদালতকে অভিযুক্ত করে জানায়, ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ভেঙে ইসরায়েলি দখলকে আরও সক্ষম করে তুলতে নজির স্থাপন করছেন আদালত।
জাতিসংঘের মানবকল্যাণ–বিষয়ক সমন্বয়কারী জেমি ম্যাকগোল্ডরিক এবং অন্য জাতিসংঘ কর্মকর্তারা ভবন ভাঙার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েলি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের নীতি চলমান রাখার মধ্য দিয়ে দুই দেশের সংকট সমাধান ও শান্তি আনার প্রচেষ্টাকে খাটো করা হয়।