কৌশিক সেনকে ফোনে হত্যার হুমকি

অসহিষ্ণুতা নিয়ে সরব হওয়ায় হুমকির মুখে পড়লেন অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন।
অসহিষ্ণুতা নিয়ে সরব হওয়ায় হুমকির মুখে পড়লেন অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন।

‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে ঘিরে ভারতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ও রামের নামে উন্মাদনা বন্ধের আহ্বানও জানিয়ে লেখা চিঠির কারণে হুমকির মুখে পড়লেন অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁর কাছে ফোন আসে।

হত্যার হুমকির পরই আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন কৌশিক সেন। পুলিশ বলেছে, ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ধর্মের নামে ভারতে যেভাবে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা বাড়ছে, তাতে চিন্তিত হয়েই ৪৯ জন বিদ্বজ্জন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি লিখেছেন। বিদ্বান ব্যক্তির চিঠিতে ভারতের যুগ যুগ ধরে লালিত ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমুন্নত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। চিঠিতে কবি, লেখক, সাহিত্যিক, চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, শিক্ষাবিদ, গায়কদের মধ্যে স্বাক্ষর রয়েছে কৌশিক সেনেরও। এর জেরেই হত্যার হুমকি পেলেন বলে অভিযোগ কৌশিক সেনের।

কৌশিক সেন আজ বৃহস্পতিবার পিটিআইকে বলেন, ‘গতকাল বুধবার আমি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পাই। ফোনে বলা হয়, আমি যদি অসহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলা বন্ধ না করি, তবে ভয়াবহ পরিণতির জন্য যেন অপেক্ষা করি। বলা হয়, আমাকে হত্যা করা হবে।’

অভিনেতা কৌশিক বলেন, ‘এসব ফোনের হুমকিতে আমি উদ্বিগ্ন নই। যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, ওই নম্বরটি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে লেখা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অপর ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে সই করেছেন ভারতের ৪৯ জন বিদ্বান। এঁদের মধ্যে আছেন কবি, লেখক, সাহিত্যিক, চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, সমাজসেবী, চিকিৎসক, ভাস্কর, পরিবেশবিদ, চিত্রকর, শিক্ষাবিদ, গায়ক। আছেন চিত্র পরিচালক কেতন মেতে, মণিরত্নম, শ্যাম বেনেগাল, অনুরাগ কাশ্যপ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অভিনয়শিল্পী কঙ্কণা সেনশর্মা, সংগীতশিল্পী শুভা মুদগল, অঞ্জন দত্ত, রূপম ইসলাম ও ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ প্রমুখ।

বিদ্বজ্জনেরা মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে অবিলম্বে ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা বন্ধের দাবি তুলে বলেছেন, গণপিটুনি ও ধর্মের নামে যে উন্মাদনা চলছে, তা ধর্মনিরপেক্ষ একটি দেশের জন্য কাম্য নয়। ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের ওপর আঘাতস্বরূপ। এ নিয়ে তাঁরা, বিশেষ করে দলিত ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর যে অত্যাচার, গণপিটুনি ও মারধর চলছে, তার জন্য তাঁরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁরা এই দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা যে বারবার আঘাত খাচ্ছে, সে কথাও তুলে ধরেছেন।