পশ্চিমবঙ্গে বেড়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা

পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ বেড়েছে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জির
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ বেড়েছে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জির

পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রস্তাব দিলে এবার পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে বাঘ সাফারির উদ্যোগ নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার যৌথভাবে এই বাঘ সাফারির আয়োজন করতে পারে।

ভারতের কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় শুক্রবার ভারতের সংসদ লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানিয়েছেন। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার থাকলেও এখানে পর্যটকদের জন্য বাঘ সাফারির ব্যবস্থা নেই। এতে বহু পর্যটক বাঘ সাফারির জন্য বিদেশে যান। এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, এ ব্যাপারে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রস্তাব পেলে উদ্যোগী হতে পারেন। সুন্দরবন আজ ভারত নয় গোটা বিশ্বেরই ঐতিহ্য।

অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এখন সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১০ সালে ভারতীয় সুন্দরবনে ছিল ৭০টি বাঘ। ২০১৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৬টি। আর ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে এখন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮২টি। এই হিসাব অবশ্য ২০১৪ সালের।

লকেটের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় আরও বলেছেন, সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ বেড়েছে। ১৯৬০ সালে এই অরণ্যের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কিলোমিটার। ১৯৮৭-তে তা কমে ৪ হাজার ৫৬ কিলোমিটার হয়েছিল। তবে ১৯৯৫-তে ফের বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। আর ২০০৭-এ আরও বেড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার হয়েছে।

এদিকে আজ কলকাতার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সব ঠিক থাকলে আগামী সোমবার ২৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরেই বিশ্ব বাঘ দিবসে দেশের সর্বশেষ বাঘ সুমারির ফল প্রকাশিত হবে। ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস হিসেবে পালিত হয়।

প্রথম বিজ্ঞানসম্মতভাবে ২০০৬ সালে পরিচালিত সুমারিতে গোটা ভারতে বাঘের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১১টি। ২০১০ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭০৬টি। আর সর্বশেষ ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২২৬টি। প্রতিবেদনে এ কথাও বলা হয়, ২০১৫ সালে বাঘ মারা গেছে ৮২টি, ২০১৬ সালে ১২১টি, ২০১৭ সালে ১১৭টি ও ২০১৮ সালে ১০৩টি। আবার গত ৪ বছরে চোরা শিকারির হাতে মারা গেছে ৭৩টি বাঘ।

প্রসঙ্গত, গত বছরই ভারতের বাঘ সুমারিতে ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশ পরিকাঠামোগত সাহায্য করেছে। এবারই প্রথম এই বাঘ সুমারিতে ‘এমস্ট্রাইপ’ নামের মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার হয়েছে। ২০১৪ সালে মোট ৩ লাখ ৭৮ হাজার ১১৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সমীক্ষা চালানো হয়। ২০১৮ সালে ৫০টি বাঘ প্রকল্প–সংবলিত ১৮টি রাজ্য ছাড়াও এই প্রথমবার নাগাল্যান্ড, মণিপুর, গুজরাটেও সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ফলে এই সমীক্ষার পর বাঘবিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, গোটা ভারতে এবার বাঘের সংখ্যা বাড়বে। সেই সংখ্যা ৩ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে।