রাশিয়ায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ১৪০০

মস্কোতে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি
মস্কোতে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বিক্ষোভ করছিলেন হাজারো মানুষ। রোববার এক দিনেই প্রায় ১৪০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিক্ষোভ করার সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বড় ধরপাকড়ের ঘটনা এটি।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার নগর নির্বাচনে অন্যতম জনপ্রিয় এক প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা মস্কোর সিটি হলের বাইরে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে প্রায় ১ হাজার ৪০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওভিডি-ইনফো নামের এক পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, বিক্ষোভ থেকে ১ হাজার ৩৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংস্থাটি বলছে, ২০১১ সালের পর এই প্রথম রাশিয়ায় একসঙ্গে এত লোক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটল।

জীবনযাত্রার মান কমে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান জন-অসন্তোষের মধ্যেই এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল। আগামী সেপ্টেম্বরে সিটি কাউন্সিল ভোটের আগে নেওয়া এক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই প্রায় ২২ হাজার লোক রাস্তায় নেমেছিল।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় রুশ পুলিশের। ছবি: এএফপি
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় রুশ পুলিশের। ছবি: এএফপি

বিক্ষোভের পর সরকারি তদন্ত কর্মকর্তারা বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় প্রার্থীর বাড়ি ও কার্যালয়ে অভিযান চালান। বিক্ষোভের ডাক দেওয়ায় এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ক্রেমলিনের অন্যতম সমালোচক আলেক্সেই নাভালনিকে। এর প্রতিবাদে নাভালনির দল আবারও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।

সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিরোধীদলীয় নেতা ইলিয়া ইয়াসিন টুইটারে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকার সব যুক্তিবোধ হারিয়ে ফেলেছে। তারা হতাশাবাদীর মতো আচরণ করছে।’

এদিকে কারাদণ্ড পাওয়া বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁর শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে কিছু না জানালেও নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ জানিয়েছেন, অ্যালার্জিজনিত সংক্রমণের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নাভালনি। কারাগারে নেওয়ার আগে নাভালনি কখনো এমন কারণে অসুস্থ হননি—এমনটিও দাবি করেছেন তিনি। অবশ্য বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাভালনির শারীরিক অবস্থা এখন সন্তোষজনক।

২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিপক্ষে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনবিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে রুশ রাজনীতিতে জনপ্রিয় হন নাভালনি। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় বেশ কয়েকবার কারাগারে যেতে হয়েছে তাঁকে। জালিয়াতির অভিযোগ থাকায় ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের বিপক্ষে লড়তে পারেননি নাভালনি।