ভারতে বাঘ বেড়েছে

ভাস্কর মুখার্জি
ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির বাঘশুমারির প্রতিবেদন পেশ করে বলেছেন, সেখানে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। সুন্দরবনেও বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৪ সালের সর্বশেষ বাঘশুমারিতে বলা হয়েছে, ভারতের বাঘের সংখ্যা ২ হাজার ২২৬। সে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭। বৃদ্ধির হার ৩৩ শতাংশ। সুন্দরবনে ওই সময় বাঘের সংখ্যা ছিল ৭৬। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৮টি।

বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬ শতাংশ। আর ভারতে সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। সেখানে বাঘের সংখ্যা ৫২৬। দ্বিতীয় স্থানে কর্ণাটক রাজ্য। সংখ্যা ৫২৪। তবে আগের শুমারিতে শীর্ষে ছিল কর্ণাটক।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যৌথভাবে চালানো হয় এই বাঘশুমারি। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান। গতবারের এই বাঘশুমারিতে ব্যবহার করা হয় অত্যাধুনিক ট্র্যাপ ক্যামেরা বা ক্যামেরা ফাঁদ। এই ট্র্যাপ ক্যামেরার পাশাপাশি বাঘের মল, মূত্র, পায়ের ছাপ ইত্যাদির নমুনাও পর্যালোচনা করা হয়। বাঘ বিশেষজ্ঞরা এগুলো পর্যালোচনা করেন।

ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে সুন্দরবনের আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর ৪০ শতাংশের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গে আর বাকি ৬০ শতাংশ বাংলাদেশে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য বন কর্মকর্তা রবিকান্ত সিনহা বলেছেন, বাঘ গুনতে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান যৌথভাবে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসায় এবং যাবতীয় নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর এসব নিয়ে ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের রাজধানী দেরাদুনে ওয়ার্ল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া বাঘশুমারি পর্যালোচনা করে। এরপর বাঘশুমারির প্রতিবেদন তৈরি হয়।

বাঘশুমারির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরে চোরা শিকারিদের হাতে ৭৩টি বাঘ মারা গেছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে বাঘ হত্যা করা হয়েছে ১২টি, ২০১৬ সালে ২১টি, ২০১৭ সালে ২৭টি এবং ২০১৮ সালে ১৩টি। যদিও ২০১৫ থেকে ২০১৮—এই চার বছরের ভারতে মোট ৪২৩টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।

ভাস্কর মুখার্জি
ভাস্কর মুখার্জি

২০১০ সালে ভারতীয় সুন্দরবনে ছিল ৭০টি বাঘ। ২০১৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৬টি।

২০০৬ সালে প্রথম বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিচালিত শুমারিতে গোটা ভারতে বাঘের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১১। ২০১০ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭০৬। আর সর্বশেষ ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২২৬টি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে বাঘ মারা গেছে ৮২টি, ২০১৬ সালে ১২১টি, ২০১৭ সালে ১১৭টি এবং ২০১৮ সালে ১০৩টি।

গত চার বছরে চোরা শিকারির হাতে মারা গেছে ৭৩টি বাঘ।

২০১৮ সালে ৫০টি ব্যাঘ্র প্রকল্পসংবলিত ২১টি রাজ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ২০১৮ সালের এই বাঘশুমারিতে ১৪ হাজারের বেশি ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। ৫০টি ব্যাঘ্র প্রকল্পসহ ২১ রাজ্যে এই সমীক্ষা চলেছে। সমীক্ষা চালানো হয়েছে ৩ হাজার ২০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ের বনাঞ্চলেও। আরও জানা গেছে, বিশ্বে মোট বাঘের সংখ্যার ৭০ শতাংশেরই বাস ভারতে।