যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার ব্যাংকের ১০ কোটি গ্রাহকের তথ্য বেহাত

সাইবার হামলা
সাইবার হামলা

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ১০ কোটিরও বেশি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যাকলিনভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ওয়ানের কম্পিউটার ব্যবস্থা হ্যাক করে ওই তথ্য চুরি করেছে হ্যাকার।

এই ঘটনাকে ব্যাংকিংয়ের ইতিহাসে বড় সাইবার হামলাগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পেইজ থম্পসন (৩৩) নামের এক নারী গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার হয়েছেন।

ক্যাপিটাল ওয়ান ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে। সম্পদের দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় ১০ম অবস্থানে রয়েছে।

সোমবার ক্যাপিটাল ওয়ান এক বিবৃতিতে বলেছে, হ্যাকের বিষয়টি ১৯ জুলাই তারা ধরতে পেরেছে। প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে হ্যাকার। তাদের গ্রাহকের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর বেহাত হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের অ্যাকাউন্ট নম্বর চুরি হলেও গ্রাহকের ক্রেডিট কার্ডের স্কোর ও যোগাযোগের তথ্যসহ বেশ কিছু তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকার।

বিবৃতিতে ক্যাপিটাল ওয়ান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আনুমানিক ১০ কোটি গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকার। আর কানাডায় বেহাত হয়েছে ৬০ লাখ গ্রাহকের তথ্য। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৪০ হাজার সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর এবং এসব নম্বরসংশ্লিষ্ট ৮০ হাজার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চুরি করেছে হ্যাকার। আর কানাডায় ক্যাপিটাল ওয়ানের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট প্রায় ১০ লাখ সামাজিক বিমা নম্বর বেহাত হয়েছে।

তবে বেহাত হওয়া তথ্যগুলো ব্যবহার করে হ্যাকার প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না বলেই মনে করছে ক্যাপিটাল ওয়ান। এ সত্ত্বেও এত বড় হ্যাকের ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ক্যাপিটাল ওয়ানের চেয়ারম্যান রিচার্ড ফেয়ারব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হ্যাকার ধরা পড়ায় আমি খুশি। তবে যা ঘটে গেছে, তার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। এ ঘটনায় ভুক্তিভোগী যাঁরা, তাঁদের জন্য বিষয়টি যে ভয়ের কারণ, তা আমরা বুঝতে পারছি। আমি তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’

হ্যাকিংয়ের ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তির তালিকায় রয়েছেন পেইগ এ থম্পসন। ‘ইরাটিক’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য ফাঁসের খবর জানান তিনি। এর মধ্যে সিয়াটলের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে মামলার শুনানি শুরু হবে।

গত সোমবার থম্পসনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁর যাবতীয় ডিজিটাল যন্ত্র জব্দ করে এফবিআই। সেখানে হ্যাক করার চেষ্টা চালানো হয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৯ জুলাই তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে গোলমাল ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আইনি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে থম্পসনের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ১১ লাখ টাকার কিছু বেশি) জরিমানা হতে পারে। তথ্যসূত্র: বিবিসি