সাংসদ শতাব্দী রায় ফেরত দেবেন ২৯ লাখ রুপি!

শতাব্দী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।
শতাব্দী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।

তৃণমূল সাংসদ এবং টালিউড তারকা শতাব্দী রায় এবার সারদার চিটফান্ড থেকে নেওয়া ২৯ লাখ রুপি ফিরিয়ে দিতে চান। সারদা মামলায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁকে বারবার তলব করার পর তিনি গত সোমবার ইডিকে জানিয়ে দেন, এ ব্যাপারে অনুমতি মিললে তিনি ফিরিয়ে দেবেন সেই টাকা।

শতাব্দী রায় এবার নিয়ে তিনবার তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাংসদ হন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম আসনে। তাঁর বিরুদ্ধে সারদার অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সারদার ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ৪২ লাখ রুপি নেন তিনি। যদিও বিভিন্ন কর কাটার পর তাঁর হাতে আসে ২৯ লাখ রুপি। এবার সে টাকাই ফেরত দিতে চাইছেন শতাব্দী রায়। এই লক্ষ্যে তিনি ইডির কর্মকর্তাদের চিঠিও দিয়েছেন।

চলতি মাসে ইডি বা ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সারদা মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে চিঠি দেয়। দপ্তরে দেখা করার জন্য তাঁকে তলবও করে। কিন্তু তাতে তিনি তেমন সাড়া দেননি। এরপর সোমবার ফের চিঠি পাঠায় ইডি। সেই চিঠির জবাবে শতাব্দী রায় জানিয়ে দেন, সংসদ অধিবেশনের কারণে আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত তিনি আসতে পারছেন না। এরপর তিনি হাজির হবেন ইডি দপ্তরে। একই সঙ্গে জানিয়ে দেন, তিনি সারদার কাছ থেকে নেওয়া ২৯ লাখ রুপি ফিরিয়ে দিতে চান। অনুমতি মিললে তিনি ব্যাংক ডিডির মাধ্যমে সেই টাকা ফেরত দেবেন। এর আগে অমিতাভ বচ্চনও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন টাকা।

শতাব্দীর সঙ্গে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সুসম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে তিনি সারদার ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের দুটি চাঞ্চল্যকর আর্থিক দুর্নীতির মামলা সারদা ও রোজভ্যালি চিটফান্ড মামলা। সারদার মামলাটি ছিল ২১ হাজার কোটি রুপির আর্থিক দুর্নীতির আর রোজভ্যালিরটি ছিল ৬০ হাজার কোটি রুপির আর্থিক দুর্নীতি মামলা। এই দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়েন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের কয়েকজন নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়ক, যার মধ্যে ছিলেন শতাব্দী রায়ও।

২০১৩ সালে ফাঁস হয় সারদার আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা। এই ঘটনায় সেদিন গ্রেপ্তার হন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, পরিচালক দেবযানী মুখার্জি, সারদার মিডিয়া সেলের কর্ণধার ও সাংসদ কুণাল ঘোষ, তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বোস, তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী মদন মিত্র, কলকাতা পুলিশের সাবেক মহাপরিচালক রজত মজুমদার প্রমুখ। এই সারদা মামলায় সাড়ে ১৭ লাখ ক্ষুদ্র আমানতকারীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। পরে অবশ্য কুণাল ঘোষ, সৃঞ্জয় বোস, মদন মিত্ররা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।

অন্যদিকে, ২০১৫ সালের মার্চে ফাঁস হয় রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতির কথা। অভিযোগ ওঠে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের বিনিয়োগকৃত ৬০ হাজার কোটি রুপি আত্মসাতের। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হন রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। আরও গ্রেপ্তার হন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেতা তাপস পাল এবং সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলায়ও উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সারদা ও রোজভ্যালির কর্ণধাররা এখনো কারাগারে। এ দুটি মামলার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও ইডি।