ভালো ইংরেজি না জানার অভিমানে আত্মহত্যা

ভালো ইংরেজি না জানার অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্র ঋষিক কোলে (১৮)। গতকাল শুক্রবার রাতে উত্তরপাড়া ও হিন্দমোটর রেলস্টেশনের মাঝে তাঁর ট্রেনে কাটা পড়া লাশ পাওয়া যায়। পকেটের সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলাম’।

ঋষিক কোলে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরের অপূর্বপুরের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বাংলা মাধ্যমের এই শিক্ষার্থী এবার উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কলেজ সেন্ট জেভিয়ার্সে ভর্তির সুযোগ পান। সেখানে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকে ভর্তি হন ঋষিক।

হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করার জন্য কলকাতায় চলে আসেন ঋষিক কোলে। গত রোববার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বেনিয়াপুকুর থানা এলাকায় কলেজের একটি হোস্টেলে ওঠেন। দুই দিনে কলেজের আটটি ক্লাসের মধ্যে চারটিতে অংশও নেন। কিন্তু ঋষিক ইংরেজি জানলেও চোস্ত ইংরেজিতে কথা বলতে অসুবিধা হতো তাঁর। ক্লাস-হোস্টেল সর্বত্রই বন্ধুরা ইংরেজি আর হিন্দিতে কথা বলত। আর এ ভাষার সঙ্গেই মানিয়ে নিতে পারছিলেন না ঋষিক। এ কথা তিনি কলেজ এবং হোস্টেলের বন্ধুদেরও বলেছিলেন।

গত বৃহস্পতিবারে একটি বালতি কেনার কথা বলে হোস্টেল থেকে বেরিয়ে যান ঋষিক। রাতে হোস্টেলে ফিরে না আসায় বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ করে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। খবর দেওয়া হয় তাঁর সিঙ্গুরের গ্রামের বাড়িতে।

গতকাল রাতে উত্তরপাড়া ও হিন্দমোটর রেলস্টেশনের মাঝে ট্রেনে কাটা পড়া ঋষিকের লাশ মেলে। তাঁর পকেটে পাওয়া যায় একটি সুইসাইড নোট। এতে লেখা, ‘পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলাম’। হোস্টেলের ছাত্ররা এবং ঋষিকের পরিবার মরদেহ শনাক্ত করেছে। গতকালই তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, ঋষিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার ডমিনিক স্যাভিও বলেন, তিনি শুনেছিলেন ঋষিক পড়াশোনা নিয়ে জটিলতায় ভুগছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগেই চলে গেল। এ ঘটনার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও হোস্টেলজুড়ে।