হংকংয়ে জননিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধের আহ্বান

বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে সমালোচিত হয়েছে হংকং পুলিশ। ছবি: রয়টার্স
বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে সমালোচিত হয়েছে হংকং পুলিশ। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এক দ্বিপক্ষীয় গোষ্ঠী হংকং পুলিশের কাছে যুদ্ধাস্ত্র ও জননিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। হংকং পুলিশের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এ আহ্বান জানান আইনপ্রণেতারা।

হংকংয়ের গণতন্ত্র কর্মী জোশুয়া ওং চলতি সপ্তাহে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেটের ছবিসহ এক টুইট করেন। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর এসব ব্যবহার করছে বলে জানান তিনি।

কংগ্রেসের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার স্মিথ ও জেমস ম্যাকগভার্ন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও বাণিজ্যসচিব উইলবার রসকে একটি চিঠিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁরা লিখেছেন, ‘ভবিষ্যতে হংকং পুলিশ বাহিনীর কাছে জনতা ও দাঙ্গানিয়ন্ত্রণ সরঞ্জামাদি বিক্রয় স্থগিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র হংকংয়ের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়নে অবদান রাখবে না বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

হংকং ও চীনা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও চলমান বিক্ষোভকে দাঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেছে চীন। চীন একাই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী উল্লেখ করে চীন-হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ওং তাঁর টুইটে লিখেছেন, সমস্ত অস্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভে হংকং পুলিশের বর্বরতার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব দেশের উচিত কুখ্যাত হংকং পুলিশের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের ডাক দেওয়া।

প্রায় দুই মাস আগে এক রাজনৈতিক সংকটে উত্তাল হয়ে ওঠে হংকং। বিতর্কিত অপরাধী প্রত্যর্পণ আইনের বিরুদ্ধে হংকংয়ের পথে নামে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। নতুন এ আইন অনুযায়ী চীন চাইলে সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারবে। কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার সতর্কতাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হাজার হাজার বেসামরিক কর্মচারী গতকাল প্রথমবারের মতো সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন।

যে আইন নিয়ে এ আন্দোলন, সেখানে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে; বিশেষত যেসব অপরাধীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে।

হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, এ আইন নিয়ে এত দুর্ভাবনার কিছু নেই। কারণ, এ অপরাধী প্রত্যর্পণ অনুরোধে সাড়া দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি হংকংয়ের বিচার বিভাগই নেবে। এ আইনের ফলে চীনা বিচারব্যবস্থার অধীনে অন্যায্যভাবে আটক ও বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।