ভারতের বেআইনি সিদ্ধান্তে আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট হবে: ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: এএফপি
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: এএফপি

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিয়েছে মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, রাজ্যকে দুই ভাগও করে ফেলা হয়েছে। ভারতের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারতের এই বেআইনি সিদ্ধান্তের ফলে আঞ্চলিক শান্তি, সম্প্রীতি ও নিরাপত্তা নষ্ট হবে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে আজ সোমবার আয়োজিত বৈঠকের একপর্যায়ে এসব মন্তব্য করেন ইমরান খান। ভারতের এমন সিদ্ধান্তে জাতিসংঘের নীতিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও মনে করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। ইমরান বলেন, ‘ভারতের এই সিদ্ধান্তে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের আরও অবনতি হবে।’

রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মধ্য দিয়ে আজ সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে ভারত। রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হচ্ছে নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। এখন থেকে এর পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পরিচালনা করবেন দুই লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

ভারতের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশটির এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করবে তারা। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের কথাও বলেছে পাকিস্তান।

ভারতের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি টুইট করে বলেছেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের প্রতি রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা সেই প্রতিজ্ঞায় অটল থাকার ব্যাপারটি নিশ্চিত করছি।’ জাতিসংঘ, ওআইসি, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বন্ধুরাষ্ট্রগুলো যেন এই ইস্যুতে নিশ্চুপ না থাকে, সেই বিষয়ে তাদের কাছে পাকিস্তান অনুরোধ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ভারতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীরে স্বাধীনতা আন্দোলন আরও বেগবান হবে, এমন মন্তব্যও করেছেন কোরেশি। তিনি বলেন, ‘আমরা আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমি বিশ্বাস করি, ভারতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীরে স্বাধীনতা আন্দোলন আরও গতিশীল হবে।’

এদিকে ভারতে সরকারের সমর্থকেরা এই সিদ্ধান্তকে প্রবলভাবে সমর্থন জানালেও বিরোধীরা সংসদের কক্ষে বসে প্রতিবাদ জানান। কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম জানান, সরকার যা করেছে, তা দেশ ও গণতন্ত্রের পক্ষে চরম বিপজ্জনক। এই সিদ্ধান্ত দেশকে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। বিজেপির শরিক সংযুক্ত জনতা দল এই সিদ্ধান্তে শরিক হয়নি। দলের নেতা কে সি ত্যাগী বলেছেন, তাঁরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধী।