কারাবন্দী বাবাকে দেখতে গিয়ে গ্রেপ্তার মরিয়ম নওয়াজ

মরিয়ম নওয়াজ। ফাইল ছবি
মরিয়ম নওয়াজ। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির জাতীয় জবাবদিহি সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) মরিয়মের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই ইউসুফ আব্বাসকেও গ্রেপ্তার করে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-নওয়াজ) নেতা নওয়াজ দুর্নীতির দায়ে সাত বছরের কারাভোগ করেছেন। এই দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আছেন মরিয়ম নওয়াজ। দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, মরিয়মকে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে এনএবির হেফাজতে নেওয়ার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখানো হয়।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, চৌধুরী সুগার মিলের অর্থ পাচারের সঙ্গে মরিয়ম ও ইউসুফের যোগসাজশ আছে—এমন অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মরিয়ম লাহোরের একটি কারাগারে বন্দী তাঁর নওয়াজ শরিফকে দেখে ফিরছিলেন। মরিয়ম ওই সুগার মিলের একজন অংশীদার (শেয়ারহোল্ডার)।

এনএবি মরিয়ম ও ইউসুফের গ্রেপ্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তাঁদের দুজনকে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল শুক্রবার তাঁদের লাহোর আদালতে হাজির করা হবে। এর আগে গত ৩১ জুলাই চৌধুরী সুগার মিল সংক্রান্ত বিষয়ে মরিয়মের বক্তব্য রেকর্ড করেছিল এনএবি।

পিএমএল-নওয়াজের প্রধান ও মরিয়মের চাচা শাহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মরিয়মকে গ্রেপ্তার সরকারের ভুল পদক্ষেপ। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়, দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। ঈদের আগে এ ধরনের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সরকার কী বার্তা দিতে চাচ্ছে? জনগণ এর উপযুক্ত জবাব দেবে।

মরিয়মের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তাঁর সমর্থকেরা দেশটির জাতীয় পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করে। সেখানে মরিয়ম আওরঙ্গজেব ও আহসান ইকবালের মতো সাংসদেরা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৮ সালে অক্টোবর থেকে চৌধুরী সুগার মিল সংক্রান্ত অর্থ পাচারের অভিযোগটি তদন্ত করছে এনএবি। এই মিলের অংশীদার হিসেবে নওয়াজ শরিফ, মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ, ভাই শাহবাজ শরিফসহ যুক্তরাজ্যের কয়েকজনের নাম রয়েছে।

পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্যে ওঠে আসে, নওয়াজ শরিফ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই সুগার মিলের নামে বিপুল পরিমাণে পাকিস্তানি রুপি বিদেশে পাচার করেছিলেন। এই সংক্রান্ত মামলায় আদালতের আদেশের পর তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয়।

গত ২৪ ডিসেম্বর একটি দুর্নীতি মামলায় নওয়াজকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে । সেই দণ্ড ভোগ করছেন তিনি।