মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে বলেছিলেন: শোভন

কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জী
কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জী

তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ডিভোর্স দিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁকে বলেছিলেন।

শোভনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েন অনেক দিন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির আলোচ্য বিষয়। শোভন গত বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আবার এ বিষয় আলোচনায় আসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি শোভনের স্ত্রী রত্নার পাশে আছেন। মমতার এ মন্তব্যের পরই এসব কথা বললেন শোভন।

১৪ আগস্ট দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে যোগদান করেন বিজেপিতে। শোভন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত কাছের মানুষ। তাই মমতাও এই মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দুই দফায় কলকাতা করপোরেশনের মেয়র পদে বসান। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিত্বে তিনটি দপ্তরের দায়িত্ব দেন। বিধায়ক করেন। দায়িত্ব পান তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলারও।

কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় সাম্প্রতিক কালে হঠাৎ করে এক পারিবারিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন। মনোমালিন্য দেখা দেয় তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পারিবারিক এই কলহ এত প্রকট হয়ে পড়ে যে শোভন চট্টোপাধ্যায় স্ত্রীকে ডিভোর্স করার জন্য আলিপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনো চলছে। এই মামলার জেরে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের বাসভবন ছেড়ে ওঠে পড়েন দক্ষিণ কলকাতার একটি আবাসনে। সেখানে থেকে শোভন মামলা চালাতে থাকেন। একই সঙ্গে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক কার্যত বিচ্ছিন্ন করেন। এখনো সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।

বিজেপিতে যোগদানের আগে শোভন চট্টোপাধ্যায় মমতার বিরুদ্ধে কোনো দিন একটি কথাও বলেননি। বরং স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাদের জেরে মমতা শোভনকে টিপ্পনী কাটতে দ্বিধা করতেন না। শোভন বিজেপিতে যোগ দিয়ে ধীরে ধীরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, কখনো মন্ত্রিসভা বৈঠকে অথবা কখনো বিধানসভার লবিতে অযথা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বক্রোক্তি করতেন মমতা। এমনকি মমতা তাঁকে এ কথাও বলেছিলেন, রত্নার সঙ্গে বনিবনা না হলে ডিভোর্স দিয়ে দাও।

এদিকে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদানের পর মমতা ১৫ আগস্ট বলেছিলেন, ‘পার্থদাকে (পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের মহাসচিব) বলেছি, রত্নাকে দেখো। ওকে কাজে লাগাও। রত্নার পাশে তৃণমূল আছে।’