সিপিআই-সিপিএম একীভূত হওয়ার পথে?

অস্তিত্ব সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিআই ও সিপিআইয়ের (এম) পুনর্মিলন ঘটাতে পারে।

দুইয়ে মিলে বৃহৎ কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ। একীভূত হওয়া নিয়ে ভারতের এই দুই পুরোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। যদিও দুই দল এখনো এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি।

ভারতে একটি শক্তিশালী দল ছিল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিআই। দলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর। পরবর্তী সময়ে এই দল ভেঙে ১৯৬৪ সালের ৭ নভেম্বর তৈরি হয় সিপিআই (এম) বা সিপিএম। বৃহৎ দলটি দুভাগ হওয়ার পর আরও নতুন দল তৈরি হয়েছে।

কিন্তু ভারতজুড়েই এখন চলছে বামপন্থী দলের দুর্দিন। একসময় এই বামপন্থীরা পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা আর ত্রিপুরা শাসন করত দাপটের সঙ্গে। অন্য বেশ কটি রাজ্যে বামপন্থীদের অবস্থানও সুদৃঢ় ছিল। বিশেষ করে বিহার, ওডিশা, ঝাড়খন্ডে। আবার বামপন্থীদের সংগঠন মাওবাদীরা এসব রাজ্য ছাড়া মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, অন্ধ্র প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রে শক্তিশালী ছিল। এখন একে একে নিবিল দেউটির মতো গোটা দেশে ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে বামপন্থীরা। বামপন্থীদের দল ও জোটের গড়া বামফ্রন্ট ক্ষমতা হারিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায়। এখন একমাত্র টিকে আছে কেরালায়। সেখানে সরকার চালাচ্ছে বামফ্রন্ট।

এবার লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয় হয়েছে সিপিএম ও সিপিআইয়ের। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় লোকসভায় একটি আসনও পায়নি তারা। ফলে এই দুই দলের অস্তিত্ব এখন সংকটের মুখে। তাই দুই দলকে ফের এক করে নতুনভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিকে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে দুই দল কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে। যদিও দল দুটি বামফ্রন্টের শরিক, তবু তারা চাইছে বামপন্থী এই দুই দলকে এক করে কমিউনিস্ট পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে। সেই লক্ষ্যে এই দুই দল এগোচ্ছে। কলকাতার সংবাদপত্র এ নিয়ে প্রতিবেদনও করেছে।

সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই দলের শীর্ষ নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও ডি রাজা এখন ফের উদ্যোগী হয়েছেন। ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের (সিপিআই নেতা) জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে এই দুই নেতা নাকি এই দুই বামপন্থী দলকে ফের এক পতাকাতলে নিয়ে আসার ব্যাপারে কথা বলেছেন। যদিও এই সংযুক্তিকরণ নিয়ে এখনো কোনো দলের পক্ষ থেকে কোনো কথা বলা হয়নি।

মূলত, এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের শোচনীয় পরাজয়ের পর দল দুটি নতুন করে ভাবনা শুরু করেছে। তারা চাইছে বৃহৎ কমিউনিস্ট আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে। সেই লক্ষ্যে এই দুই দলের অনেক নেতাও চাইছেন দুই কমিউনিস্ট পার্টি ফের মিলে যাক। বেগবান করুক গোটা দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনকে।

জানা গেছে, এই মিলনের জন্য নাকি দুই পার্টির ৫ জন করে ১০ জন প্রতিনিধি নিয়ে গড়া হয়েছে একটি কমিটি। এই কমিটি পর্যালোচনা করে এই দুই দলে সংযুক্তিকরণের প্রশ্নে মতামত দেবে।