'চা বানালেই মোদি হওয়া যায় না'

জনসংযোগে গিয়ে চা বানিয়ে উপস্থিত লোকদের খাওয়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
জনসংযোগে গিয়ে চা বানিয়ে উপস্থিত লোকদের খাওয়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে জনসংযোগে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসংযোগের অংশ হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুরের ওল্ড দীঘায় গিয়ে তিনি নিজে উপস্থিত ব্যক্তিদের চা বানিয়ে খাওয়ান। এ কথা শোনার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘চা বানালেই মোদি হওয়া যায় না।’

এবারের লোকসভা নির্বাচনে মমতার দল পেয়েছে ২২টি আসন। বিজেপি পেয়েছে ১৮টি আসন। এই ফলাফলে চিন্তিত মমতা ভারতের ‘ভোট গুরু’ প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে নতুন করে জনসংযোগ শুরু করেছেন।

মমতা এখন বস্তিতে যাচ্ছেন। গ্রামের পথে হাঁটছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের বাড়িতে গিয়ে আতিথ্য গ্রহণ করছেন। তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন।

আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে আদিবাসীদের বাড়িতে গিয়ে খাবার খেলে তৃণমূল কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাই এবার মমতার হঠাৎ করে জনসংযোগে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ায় কটাক্ষ করেছে বিজেপি

জনসংযোগে বেরিয়ে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করেন মমতা। ছবি: সংগৃহীত
জনসংযোগে বেরিয়ে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করেন মমতা। ছবি: সংগৃহীত

দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এটা তো মমতার নাটক। চা বানালেই মোদি হওয়া যায় না। এ জন্য প্রয়োজন ত্যাগ, তিতিক্ষা আর সাধনা। মোদি হওয়া অত সহজ নয়। এসব নাটক করে কোনো লাভ হবে না।’

গতকাল বুধবার মমতা জনসংযোগের অংশ হিসেবে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ওল্ড দীঘায়। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক সারেন তিনি। পরে উদয়পুরে দীঘার সায়েন্স সিটির উল্টো দিকের একটি রাস্তার পাশে পরিমল জানার চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন। সেখানে তিনি চা বানিয়ে উপস্থিত ব্যক্তিদের খাওয়ান। মমতার চা খেয়ে তারিফ করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাংসদ শিশির অধিকারীরা।

শিশির অধিকারী বলেন, ‘কলকাতায় গেলে উনি একসময় আমাদের এভাবে চা করে খাওয়াতেন। তাঁর হাতের চায়ের স্বাদ আজও সেই একই রকমেরই আছে।’

মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই চাকে চমৎকার বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো চা। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যেমন চা বানান, তেমন রাঁধেনও।’

এ সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আগেও চায়ের দোকানে বসতাম। এই চায়ের দোকানে মানুষের সঙ্গে কথা বলা যায়। তাদের কাছে যাওয়া যায়। তাদের মনের কথা শোনা যায়।’

মমতা এদিন এলাকার মানুষজনের কথা শোনেন। বাচ্চাদের হাতে লজেন্স তুলে দেন।

এ ঘটনায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক ও রাজ্যের সাবেক সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, ‘এত দিন তো চায়ের দোকানে বসতে দেখিনি। বাচ্চাদের লজেন্স দিতেও দেখিনি। এখন আর চুরিবিদ্যায় সেরা হওয়া যায় না। এরপর চায়ের দোকানে বসতে হবে। তাই প্র্যাকটিসটা সেরে নিলেন মমতা।’