শ্মশানে দলিতদের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ায়...

শ্মশানের চারপাশের জমির মালিক উচ্চবর্ণের হিন্দুরা। বেড়া দিয়ে শ্মশানঘাটে দলিতদের ঢোকার পথ বন্ধ করে দেন তাঁরা। ফলে দলিত সম্প্রদায়ের কেউ মারা গেলে তাঁরা সৎকার নিয়ে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে মৃতদেহের খাটিয়া দড়ি দিয়ে বেঁধে শ্মশানঘাটে নামিয়ে সৎকার করা হয়। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের ভেলোরের বানিয়ামবাড়ি এলাকায় চার বছর ধরে এভাবেই দলিতদের মৃতদেহের সৎকার করা হচ্ছে।

সম্প্রতি এই এলাকায় কুপ্পন নামের প্রবীণ এক দলিত সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। কুপ্পনের মরদেহ নিয়ে দলিতরা ওই শ্মশানঘাটের উদ্দেশে রওনা দিলে বাধা দেন উচ্চবর্ণের হিন্দুরা। পরে দলিতরা নদীর তীরের সেতুর ওপর মৃতদেহের সাজানো খাটিয়া নিয়ে যান। সেখান থেকে দড়ি দিয়ে খাটিয়া বেঁধে ধীরে ধীরে নামিয়ে দেওয়া হয় শ্মশানঘাটে। তারপর হিন্দু শাস্ত্রমতে সৎকার করা হয় মৃতদেহটির।

এই সৎকারের পুরো ঘটনা ভিডিও করে রাখেন দলিতরা। গত বুধবার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেতু থেকে দড়ি বেঁধে মৃতদেহ নামানোয় প্রতিবাদ জানায় ভারতের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।

ভেলোর জেলার নারায়ণপুর গ্রামের পালার নদীর কাছে অস্থায়ী শ্মশানঘাটটি অবস্থিত। দলিতদের অভিযোগ, উচ্চবর্ণের হিন্দুরা তাঁদের শ্মশানে যেতে দেন না। তাই প্রায় চার বছর ধরে তাঁরা সেতু থেকে মৃতের খাটিয়া দড়িতে ঝুলিয়ে নামিয়ে সৎকার করে আসছেন।

জেলা প্রশাসক সম্মুগ সুন্দরম বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তিনি এটাও জানতেন না যে ওখানে একটি শ্মশানঘাট রয়েছে। সরকারের খাতাপত্রে সেখানে কোনো শ্মশানঘাটের অস্তিত্ব নেই। নদীর চরের শ্মশানঘাটটি সরকার স্বীকৃত নয়, অস্থায়ী। ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসক ঘোষণা দিয়েছেন, এলাকায় সরকার একটি আলাদা শ্মশানঘাট তৈরি করে দিচ্ছে।