সাময়িক স্বস্তিতে চিদাম্বরম

পি চিদাম্বরম
পি চিদাম্বরম

আইনের চোখে সাময়িক স্বস্তি পেলেন ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস সাংসদ পি চিদাম্বরম। যদিও এ স্বস্তি একপ্রকার অর্থহীন। আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানান, অর্থ তছরুপের মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) চিদাম্বরমকে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারবে না। সর্বোচ্চ আদালতের এই রক্ষাকবচ অর্থহীন হয়ে পড়ছে, যেহেতু একই মামলায় সিবিআই তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। সেই গ্রেপ্তারির মেয়াদও ওই ২৬ অগস্ট, অর্থাৎ আগামী সোমবার পর্যন্ত। সোমবারই ঠিক হবে সাবেক অর্থমন্ত্রীর পরবর্তী ভাগ্য।

আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চিদাম্বরমের এই দুর্ভোগ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে তিনি ওই সংস্থাকে বিদেশি বিনিয়োগ পাইয়ে দিয়ে ‘কিকব্যাক’ (ঘুষ) নিয়েছিলেন। ওই কাজে তাঁর সহায়ক ছিলেন পুত্র কার্তি চিদাম্বরম, যিনি বর্তমানে লোকসভার কংগ্রেসের সাংসদ। আইএনএক্স মিডিয়ার তৎকালীন কর্তা ছিলেন ইন্দ্রাণী মুখার্জি, যিনি তৃতীয় স্বামী পিটারের সাহায্যে নিজের কন্যা শিনা বোরাকে খুন করেছিলেন। ওই মামলায় ইন্দ্রাণী রাজসাক্ষী হয়েছেন। তাঁরই এক বিবৃতিকে হাতিয়ার করে আইএনএক্স মামলায় সিবিআই চিদাম্বরমকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চায় ইডিও। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত তা তারা পারবে না।

সিবিআই যাতে তাঁকে গ্রেপ্তার না করে, সে জন্য চিদাম্বরম দিল্লি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। গত মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্ট তা খরিজ করে দেন। ওই দিনই চিদাম্বরমের হয়ে আইনজীবী কপিল সিবাল, অভিষেক মনু সিংভিরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। কিন্তু আদালত সেদিন মামলাটি শোনেননি। বুধবার মামলাটি ওঠে বিচারপতি এন ভি রামানার আদালতে। তিনি সেটি প্রধান বিচারপতির এজলাসে পাঠিয়ে দেন। শুনানির দিন ধার্য হয় আজ। কিন্তু বুধবার রাতেই সিবিআই পাঁচিল টপকে চিদাম্বরমের বাসভবনে ঢুকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত চিদাম্বরমকে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সোমবার মামলাটি ফের উঠবে সুপ্রিম কোর্টে। সেদিনই বোঝা যাবে চিদাম্বরমের হাজতবাসের মেয়াদ বাড়বে না ভোগান্তি আপাতত শেষ হবে।

বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ তছরুপসহ নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগে ইডির তদন্তের আওতায় এবার এসে পড়েছেন জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল। আজ বন্ধ হয়ে যাওয়া এই বেসরকারি বিমান সংস্থার মালিকের দিল্লি ও মুম্বাইয়ের বাড়ি ও অফিসে ইডি একযোগে তল্লাশি চালায়। নরেশ গয়ালের বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন (ফেমা) লঙ্ঘন ও শেয়ার কেনাবেচায় অসংগতির অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে একসময় প্রথম সারিতে থাকা জেট এয়ারওয়েজ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আট হাজার কোটি রুপির দেনার দায়ে বন্ধ হয়ে যায়। তার আগে কোম্পানির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন নরেশ গয়াল। কাজ হারান ২০ হাজার কর্মী। চিদাম্বরমের মতো নরেশ গয়ালও এবার ইডির তদন্তের আওতায় চলে এলেন।