অর্থাভাবে ইয়েমেনে মানবিক সহায়তা প্রকল্প বন্ধ করছে জাতিসংঘ

প্রত্যাশিত অর্থ সহায়তা না পেলে ইয়েমেনে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে থাকা ২৫ লাখ শিশুকে দেওয়া প্রয়োজনীয় সেবা কমিয়ে আনতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ছবি: এএফপি
প্রত্যাশিত অর্থ সহায়তা না পেলে ইয়েমেনে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে থাকা ২৫ লাখ শিশুকে দেওয়া প্রয়োজনীয় সেবা কমিয়ে আনতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ছবি: এএফপি

ইয়েমেনে চলমান বেশ কয়েকটি মানবিক সহায়তা প্রকল্প বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে জাতিসংঘ। গত বুধবার জাতিসংঘ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের সংবাদমাধ্যম ইউএন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদস্য রাষ্ট্রগুলো গোলযোগপূর্ণ ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য জাতিসংঘকে যে অর্থ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পরিশোধ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে অর্থের অভাবে প্রকল্পগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে জাতিসংঘ।

ইয়েমেনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রকল্পের সমন্বয়কারী লিস গ্র্যান্ড বলেন, ‘ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য যে অর্থের প্রতিশ্রুতি সদস্য দেশগুলো দিয়েছিল তা পেতে আমরা মরিয়া। যখন অর্থ পাওয়া যায় না, তখন সহায়তা বন্ধ করতে হয়, মানুষ মারা যায়।’

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার পাওয়ার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সে সময় জাতিসংঘের সদস্যা রাষ্ট্রগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা ইয়েমেনের ২ কোটি জনগণের সাহায্যে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার দেবে। তবে এখন পর্যন্ত প্রতিশ্রুত অর্থের অর্ধেকও জমা পড়েনি।

ইয়েমেনে জাতিসংঘের ৩৪টি প্রধান মানবিক সহায়তা প্রকল্প চলছে। এর মধ্যে মাত্র তিনটি বছরব্যাপী অর্থ সহায়তা পায়। গত কয়েক সপ্তাহে ওই প্রকল্পগুলোর কয়েকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ইয়েমেনের পরিত্যক্ত ও অভুক্ত পরিবারের সাহায্যে নেওয়া কয়েকটি বড় পরিসরের প্রকল্পও শুরু করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, যদি অর্থ জোগাড় না করা যায় তাহলে আরও ২২টি জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প আগামী দুই মাসের মধ্যেই বন্ধ করে দিতে হবে।

লিস গ্র্যান্ড বলেন, ‘যে পরিস্থিতিতে পড়েছি তাতে আমরা লজ্জিত। যখন কোনো (ইয়েমেনি) পরিবারের চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে হয়, আমাদের কাছে অর্থ নেই, তখন হৃদয়টা ভেঙে যায়।’ তিনি বলেন, লাখ লাখ ইয়েমেনের নাগরিক যারা কোনো রকম দোষ ছাড়াই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তারা বাঁচার জন্য আমাদের ওপর নির্ভর করছে।’

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জাতিসংঘ যদি অর্থ না পায়, তাহলে ইয়েমেনের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তা সংকটের মধ্যে পড়বে। পুষ্টিহীনতা ভুগতে থাকা ২৫ লাখ শিশুকে দেওয়া প্রয়োজনীয় সেবা কমিয়ে আনতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ১০ লাখ নারীসহ অন্তত ১ কোটি ৯৯ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এ ছাড়া ৫০ লাখ লোকের জন্য জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা আগামী অক্টোবরের শেষ নাগাদ বন্ধ করে দিতে হবে।

আরও পড়ুন:-