তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এনআরসি: মমতা

কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, অধীর চৌধুরী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, অধীর চৌধুরী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ভারতের আসাম রাজ্যে প্রকৃত নাগরিকদের নামের তালিকা (এনআরসি) নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদেরা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল শনিবার এনআরসি প্রকাশের পর এক টুইটে বলেন, ‘রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিল ওরা। এবার তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এই এনআরসি বিপর্যয়। দেশের কাছে এবার জবাব দিতে হবে তাদের। দেশ ও সমাজের স্বার্থ পরিহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে এমনটাই ঘটে।’

মমতা লিখেছেন, ‘বাংলাভাষী ভাইবোনদের জন্য খারাপ লাগছে। জাঁতাকলে পড়ে ভুগতে হচ্ছে তাঁদের।’

এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার মানুষের নাম। বাদের তালিকায় এবার মুসলিমের থেকে হিন্দুদের নাম বেশি। এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপিশাসিত আসাম রাজ্য সরকার।

এনআরসিকে কার্যত সমর্থন দিয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাবেন। আর নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেবেন।

কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা চাই কোনো ভারতীয় নাগরিক যেন এনআরসির কোপে বাদ না পড়েন।’ আসামের এনআরসি প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘ওদের সরকার, ওরা যেখানে ইচ্ছে সেখানে এনআরসি চালু করতে পারে। ওরা সংসদেও এনআরসি চালু করতে পারে। আমার বাবাও বাংলাদেশে থাকতেন। সেই হিসাবে আমিও বহিরাগত।’

সিপিএম বলেছে, দেশে বিজেপি সরকারের লক্ষ্য বিভাজন ও মেরুকরণের রাজনীতি।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘শুধু আসাম নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ সারা দেশেই চালু করা হবে এনআরসি। তবে এনআরসিতে যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে অথচ তাঁরা ভারতীয়, তাঁদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’

এদিকে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দিল্লি ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে এনআরসি চালুর দাবি উঠেছে বিজেপির মধ্যে।

দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তেওয়ারি বলেছেন, ‘দিল্লিতে এই নিয়ে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তাই দিল্লিতেও এনআরসি চালু করা প্রয়োজন।’

একই সুরে কথা বলেছেন, তেলেঙ্গানার বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতা রাজা সিং। তিনি বলেন, ‘এবার তেলেঙ্গানাতেও এনআরসি হোক।’ তিনি হায়দরাবাদের এমআইএম দলের নেতা ও স্থানীয় সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়াইসির প্রসঙ্গ তুলে এনে বলেন, ‘আসাউদ্দিন ভোট ব্যাংক বাড়াতে এখন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিচ্ছেন।’

আসাউদ্দিন এর জবাবে বলেছেন, ‘অমিত শাহ ব্যাখ্যা দিক তিনি খসড়া তালিকায় কীভাবে ৪০ লাখ অনুপ্রবেশকারীর সন্ধান পেয়েছিলেন? এবার কেন কমে ১৯ লাখ হলো?’ তাঁর অভিযোগ, ‘বিজেপি যদি শুধু হিন্দুদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়, তা সমান অধিকারের বিরোধী হবে।’