শুক্রবার থেকে পারমাণবিক কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে ইরান

রুহানি বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করলে ইরানের নতুন পদক্ষেপ শান্তিপূর্ণ হবে। ছবি: রয়টার্স
রুহানি বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করলে ইরানের নতুন পদক্ষেপ শান্তিপূর্ণ হবে। ছবি: রয়টার্স

পারমাণবিক কর্মসূচিতে আরোপ করা সব বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ গতিশীল করতে আগামীকাল শুক্রবার থেকে ইরান সেন্ট্রিফিউজ উন্নত করার কাজ করবে।

২০১৫ সালে পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল।

ইরানে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ রকম ঘোষণার পর এবার পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিধর প্রধান দেশগুলোর কূটনৈতিক আলোচনার পথ সহজ হবে।

রয়টার্সের খবরে জানা যায়, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে রুহানি বলেন, ‘শুক্রবার থেকে আমরা বিভিন্ন সেন্ট্রিফিউজের গবেষণা ও উন্নয়নের কাজ করব। শুক্রবার থেকে গবেষণা ও উন্নয়নকাজের ওপরে সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে।’

ইরান বলছে, তারা পারমাণবিক চুল্লির জ্বালানির জন্য কেবল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজ করছে।

সরকারি টিভিতে রুহানি এও বলেন, শিগগিরই পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে ইউরোপের সঙ্গে কোনো ফলপ্রসূ আলোচনার সম্ভাবনা নেই। তবে ইউরোপের কাছে এ জন্য আরও দুই মাস সময় আছে। রুহানি আশ্বস্ত করে বলেন, ইরানের নতুন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে। এতে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক দলের নজরদারি থাকবে।

ফ্রান্সের কূটনীতিক ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উন্নয়ন পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি সহযোগিতামূলক আচরণ নয়। ফ্রান্স প্রস্তাব দিয়েছে, চুক্তি রক্ষা করলে এ বছরের শেষ পর্যন্ত ইরানকে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার দেওয়া হবে।

ইরানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। আরও নিষেধাজ্ঞা আসবে।’

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ট্রাম্প ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি নিয়েছেন। এই উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র তার পথ থেকে ফিরে আসেনি। ইরানও ক্রমে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। কারণ, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতারিত হয়েছে বলে মনে করছে। একই সঙ্গে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে বলে জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। বিশেষ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে তেহরানের তেল রপ্তানি প্রায় ৮০ শতাংশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে ইরান। একই সঙ্গে মুদ্রার মান কমে গিয়ে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে।