ইরানের সেই নারী নিজেকে পুড়িয়ে মারলেন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর ১৯৮১ সাল থেকে স্টেডিয়ামে নারীদের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে ফুটবল খেলা দেখার জন্য অনেক নারীই স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ চেষ্টা করা একজন সাহার খোদাইরি।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ইরানের রাজধানী তেহরানের একটি স্টেডিয়ামে সাহারার পছন্দের ফুটবল ক্লাব ‘এসতেঘলান অব তেহরানের’ খেলা ছিল। সেই খেলা দেখার জন্য ফন্দি এঁটেছিলেন তিনি। নারীরা যেহেতু স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারেন না, তাই পুরুষ সেজে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করেন সাহার। কিন্তু স্টেডিয়ামের নিরাপত্তারক্ষীর হাতে ধরা পড়ে যান। আর নিস্তার পাননি ২৯ বছর বয়সী এই নারী। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে। তিন দিন পর জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, ‘জনসমক্ষে হিজাব ছাড়া এসেছিলেন’ সাহার।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে আদালতে গিয়েছিলেন সাহার। কিন্তু ব্যক্তিগত কাজ থাকায় মামলার কোনো সুরাহা না করেই আদালত মুলতবি করেন বিচারক। কিন্তু সাহার আদালতে জানতে পেরেছিলেন, এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পরে গায়ে গ্যাসোলিন ঢেলে আগুন দেন সাহার। অতঃপর গত সোমবার হাসপাতালে মারা যান তিনি।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ইরানিরা সাহারাকে ‘ব্লু গার্ল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে স্টেডিয়ামে নারীদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। এইচআরডব্লিউ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল—দুটি প্রতিষ্ঠানই ইরানে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নিতে ফিফার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।