পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না, হতে দেব না: মমতা

এনআরসির প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
এনআরসির প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আসামের ন্যায় বাংলায় এনআরসি চালু হবে না, হতে দেব না। এই বাংলার মানুষ মানে না এনআরসি। বিজেপি যতই চেঁচামেচি করুক না কেন, বাংলার মানুষ বিজেপির কথায় এখানে এনআরসি হতে দেবে না। কারণ বাংলার মানুষ এনআরসি চায় না। বাঙালি বিতাড়ন চায় না।’

বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে কলকাতার সিঁথির মোড় থেকে আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) প্রতিবাদে মিছিল বের করে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিল শেষে কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচ মাধার মোড়ে এক সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, বাংলা কখনো মাথা নত করতে জানে না। আর বঙ্গভঙ্গ মানবে না এই বাংলার মানুষ। পুলিশ দিয়ে আসামবাসীর মুখ বন্ধ করা গেলেও বাংলায় মুখ বন্ধ করা যাবে না। বাংলার গায়ে হাত দিয়ে দেখুক না ওরা?

বিজেপির শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না। আরেকবার বঙ্গভঙ্গ হতে দেব না। তাই তো দেশ রক্ষা করতে আমরা প্রস্তুত। অনেক গুন্ডা দেখেছি। এখানে ওসব গুন্ডামি চলবে না। আসামে বহু মানুষ জন্মসনদ এমনকি বিভিন্ন নথি জমা দিয়েও এনআরসির তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। তাই আমরা বলছি, এই বাংলায় কাউকে তাড়াতে দেওয়া হবে না। এই বাংলায় যারা বাস করছে, তারা সবাই এ দেশের নাগরিক। বাংলার অধিবাসী। এখানে ওই এনআরসি চলবে না। এনআরসির নামে একজনকেও এখান থেকে তাড়ানো চলবে না।’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় ১৯ লাখের বেশি মানুষকে এনআরসির তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এর মধ্যে ১২ লাখই হিন্দু। তাই আসাম সরকার এনআরসি করার সুযোগ পেলেও এই রাজ্যে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। মানুষ এর প্রতিবাদ করছে, করবে এবং করে যাবে।’

আসামের এনআরসির প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। দাবি উঠেছে এই বাংলায় আসামের ন্যায় এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি করতে দেওয়া হবে না। মানবেও না এনআরসি এই বাংলার মানুষ। দাবির পক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতায় বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মিছিলের নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজে ওই মিছিলে হাঁটেন। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, মেয়র ও নেতা-কর্মীরা। প্রতিবাদকারীদের কণ্ঠে ছিল বলিষ্ঠ উচ্চারণ— বাংলায় এনআরসি হবে না, হতে দেব না। এনআরসি মানি না মানব না। জয় হিন্দ, জয় বাংলা।