পশ্চিমবঙ্গে বাম সংগঠনের সচিবালয় ঘেরাও, লাঠিপেটায় আহত দেড় শ

সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির পদযাত্রা। কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির পদযাত্রা। কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্ন ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছে। এতে কর্মসূচিতে আসা ১২টি বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

রাজ্যে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, বেকার–ভাতা প্রদান, শিক্ষার খরচ কমানোর দাবিসহ সন্ত্রাসমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বাম সংগঠনগুলো এই কর্মসূচির ডাক দেয়। তারা বৃহস্পতিবার সকালে হুগলি জেলার ঐতিহাসিক সিঙ্গুর থেকে সচিবালয়ের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করে। এই কর্মসূচির নেতৃত্বে আছে বাম দল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এবং ছাত্র সংগঠন এসএফআই।

বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ওই পদযাত্রায় বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের ৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থক অংশ নেন। তাঁরা ১৮ কিলোমিটার পদযাত্রা শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুগলির ডান কুনিতে পৌঁছায়। রাতে তাঁরা ডান কুনিতে থেকে শুক্রবার ভোরে রওনা হন হাওড়ার রাজ্য সচিবালয় নবান্নর দিকে।

সকালে মিছিলসহ পদযাত্রা হাওড়া স্টেশনের দিকে এগোতে থাকলে মল্লিক ফটক এলাকায় পুলিশ তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিলকারীরা এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর শুরু হয় ইটপাটকেল ছোড়া। পুলিশও শুরু করে ব্যাপক লাঠিপেটা। এই লাঠিপেটায় আহত হন ছাত্র ও যুব সংগঠনের বহু নেতা-কর্মী-সমর্থক। পাল্টাপাল্টি আক্রমণে মল্লিক ফটক রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

পুলিশ মিছিল আটকাতে না পেরে জলকামান দিয়ে পানি ছোড়া শুরু করে। তবে এতে আন্দোলনকারীদের তেমন ঘায়েল করা সম্ভব হয়নি। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ধোঁয়ার মধ্যে লাঠিপেটা শুরু করে।

পুলিশের এই লাঠিপেটায় ডিওয়াইএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদকও গুরুতর আহত হন। আহত লোকজনকে হাওড়া হাসপাতালসহ কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডিওয়াইএফআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশের দফায় দফায় লাঠিপেটায় নারী সদস্যসহ তাদের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের হামলায় পুলিশের সদস্যরাও আহত হয়েছেন। বারবার পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে নবান্নে ঢোকার চেষ্টা করতে চাওয়ায় পুলিশ বাধ্য হয়ে তাদের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করছে।

ছত্রভঙ্গ শেষে আন্দোলনকারীরা হাওড়া জেলা সিপিএম পার্টি অফিসের সামনে জড়ো হন।