নেতানিয়াহুর ভাগ্য নির্ধারণ আজ

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও বেনি গান্টজ। ছবি: রয়টার্স
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও বেনি গান্টজ। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলে আজ মঙ্গলবার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাগ্যনির্ধারণী ভোট হিসেবে দেখা হচ্ছে। আল–জাজিরা টেলিভিশনের অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

গত এপ্রিলে ইসরায়েলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৯ এপ্রিলের নির্বাচনে নেতানিয়াহু সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় দফায় সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়।

ইসরায়েলের ইতিহাসে এই প্রথম এক বছরে দুবার সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ঘটনা ঘটল। আজকের নির্বাচনে কী ফল আসে, তা নিয়ে কৌতূহল বিশ্বজুড়ে।

স্থানীয় সময় আজ সকাল সাতটায় ১১ হাজার ১৬৩টি পোলিং স্টেশনে ভোট নেওয়া শুরু হয়। পার্লামেন্টের ১২০টি আসনে ৩১টি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

সবশেষ জনমত জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী লিকুদ পার্টির সঙ্গে বেনি গান্টজের মধ্যপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তিনটি মামলা চলছে। তিনি নির্বাচনে হারলে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়তে পারে।

ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মায়ের কোহেন আল–জাজিরাকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানান প্রশ্ন রয়েছে। যদি তিনি হারেন, তাঁর ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

নেতানিয়াহু বিচার থেকে রেহাই পেতে একটি খসড়া বিলে ডানপন্থীদের সমর্থন পাওয়া চেষ্টা করছেন।

এপ্রিলের ভোটে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ৩৬টি আসন পেয়েছিল। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সেনাপ্রধান বেনি গান্টজের ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি পেয়েছিল ৩৫টি আসন।

আজ মঙ্গলবার ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। ছবি: রয়টার্স
আজ মঙ্গলবার ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সবশেষ জরিপ বলছে, এবারের ভোটেও দুই দলের মধ্যে এক আসনের ব্যবধান থাকতে পারে। এবার লিকুদ পার্টি ৩২টি আসন পেতে পারে। আর ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি পেতে পারে ৩১টি আসন।

জরিপ অনুযায়ী, পঞ্চম মেয়াদে জেতার জন্য নেতানিয়াহুকে আগের মতোই ডানপন্থী দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে। ওই দলগুলোর সমর্থন নিয়ে ৬১ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে সরকার গঠন করতে পারবেন তিনি। অন্যদিকে, বেনি গান্টজকেও মধ্যবাম ব্লকের সমর্থন পেতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মায়ের কোহেনের মতে, নেতানিয়াহু বা গান্টজের মধ্যে কেউ-ই এককভাবে নতুন সরকার গঠন করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে একটি পথই খোলা থাকবে। তা হলো ঐক্যের সরকার।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের নির্বাচনপূর্ব জরিপ অনুসারে, ইসরায়েলি ইহুদি ভোটারদের একটি বড় অংশ নেতানিয়াহু বা গান্টজের নেতৃত্বে ঐক্যের সরকারের পক্ষে। ভোটারদের দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে রয়েছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের ডানপন্থী সরকার।

স্থানীয় সময় আজ রাত ১০টায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে। ভোট শেষেই গণনা শুরু হবে। রাতেই ফল পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। ভোটের ফল এলে পার্লামেন্ট সদস্যদের সুপারিশের ভিত্তিতে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন সিদ্ধান্ত দেবেন, কে নতুন সরকার গঠন করবে।

সাধারণত যে পার্টি জয় পায়, সেই পার্টি থেকেই প্রধানমন্ত্রী হন। তবে প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনো দল থেকে করারও বিধান রয়েছে।