এনআরসি ও ভাষানীতি নিয়ে ভূমিকায় কলকাতায় বুদ্ধিজীবীদের ক্ষোভ

কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বক্তারা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বক্তারা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারত সরকারের এনআরসি ও ভাষানীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কলকাতার সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী মহল। তারা ঘোষণা দিয়েছে, এনআরসি এবং সংবিধানের ত্রিভাষা নীতি উপেক্ষা করে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার পাঁয়তারা মেনে নেওয়া হবে না। এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণাও দেন বুদ্ধিজীবীরা।

কলকাতা প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী-বুদ্ধিজীবী মঞ্চের ডাকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী। আলোচনায় অংশ নেন কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চ্যাটার্জি, শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, মানবাধিকার সংস্থা এপিডিআরের কর্মী সুজাত ভদ্র, মালবিকা চট্টোপাধ্যায়, পার্থ সারথি সেনগুপ্ত প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আসামে যেভাবে এনআরসির নামে বাঙালি বিতাড়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা একধরনের অমানবিক পদক্ষেপ। অবিলম্বে এনআরসির নামে বাঙালি বিতাড়ন বন্ধ ও এনআরসিতে বাদ যাওয়া সব নাগরিকের নাম তোলার দাবি জানান তাঁরা। পাশাপাশি হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার যে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সেটির বিরুদ্ধেও তীব্র নিন্দা জানানো হয়। তাঁরা দাবি করেছেন, সংবিধান অনুযায়ী পুরো ভারতে ত্রিভাষা নীতি কার্যকর করতে হবে। কেবল হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করা যাবে না। কারণ, হিন্দি ভারতের সব জায়গায় ব্যবহৃত হয় না। প্রত্যেক রাজ্যের প্রধান ভাষার ওপর জোর দেওয়ারও দাবি জানান তাঁরা।

গত শনিবার হিন্দিকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার কথা বলে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শাসক দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে সভাপতি এম কে স্টালিন, কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী, পদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী, সিপিএমের নেতা মহম্মদ সেলিমসহ অনেকেই এর প্রতিবাদ করেছেন। অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে বিক্ষোভও চলছে।