সু চি বলেছিলেন, 'রোহিঙ্গারা বার্মিজ নয়, বাংলাদেশি'

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।  রয়টার্স ফাইল ছবি
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। রয়টার্স ফাইল ছবি

২০১৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। সেদিন ক্যামেরনের প্রশ্নের জবাবে সু চি বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গারা বার্মিজ নয়, তারা বাংলাদেশি।’

ক্যামেরন তাঁর স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন সু চির এই মন্তব্য। ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ক্যামেরন। তাঁর স্মৃতিকথা ফর দ্য রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘মিয়ানমারের নেত্রীর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয় ২০১২ সালে। এর কিছুদিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার কথা ছিল গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রীর। প্রায় ১৫ বছরের গৃহবন্দিত্ব থেকে তিনি সবে মুক্তি পেয়েছেন। এখন দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিতে নেতৃত্ব দেবেন। ভাবছিলাম, কী দারুণ একটি গল্পের সৃষ্টি হতে চলেছে।’

পরের বছর ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বার সু চির মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা ক্যামেরন স্মরণ করেছেন এভাবে, ‘বিশ্বের নজর তখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের দিকে। তাদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু রাখাইন থেকে। সেখান থেকে আসছে ধর্ষণ, খুন ও জাতিগত নিধনের খবর। এসব কথা আমি তাঁকে (সু চি) বললাম। তাঁর জবাব ছিল, ‘‘তারা আসলে বার্মিজ নয়, তারা বাংলাদেশি।’’’

রোহিঙ্গাদের নিয়ে সু চির মন্তব্য এমন একসময় সামনে এল, যার কয়েক দিন আগেও জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিপীড়নের পরও রাখাইনে থেকে যাওয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা গণহত্যার চরম ঝুঁকিতে আছে। তাদের রক্ষায় মিয়ানমারের সরকার কিছুই করেনি বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি। এর আগে ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।