'আবকি বার ট্রাম্প সরকার' বলে সমালোচনার মুখে মোদি

হাউডি মোদি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পরস্পরের প্রশংসা করেন মোদি ও ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
হাউডি মোদি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পরস্পরের প্রশংসা করেন মোদি ও ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি তা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব নিলেন? প্রশ্নটা তুলে প্রধানমন্ত্রীকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কংগ্রেস। দেশের এই প্রধান বিরোধী দল বলেছে, নরেন্দ্র মোদির বোঝা উচিত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্ব নিয়ে নয়।

টেক্সাসের হাউসটনের এক স্টেডিয়ামে ৫০ হাজার ভারতীয়-আমেরিকানের উপস্থিতিতে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে মোদি সরাসরি বলেন, ‘আব কি বার ট্রাম্প সরকার’। ওই স্লোগানকেই হাতিয়ার করে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা রোববার রাতে টুইট করে বলেন, কোনো দেশের নির্বাচনে নাক না গলানো ভারতের দীর্ঘ দিনের পররাষ্ট্র নীতি। ট্রাম্পকে সরাসরি সমর্থন জানিয়ে তাঁর হয়ে প্রচার করে প্রধানমন্ত্রী সেই নীতি লঙ্ঘন করেছেন।

আনন্দ শর্মা বলেছেন, ট্রাম্পের হয়ে এমন খোলামেলা প্রচার দুই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী। মোদির উদ্দেশে কংগ্রেসের এই সাবেক মন্ত্রী ও রাজ্যসভার সদস্য বলেছেন, ‘আপনাকে মনে করিয়ে দিই, আমেরিকায় আপনি গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে নয়।’

‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে মোদি ও ট্রাম্প দুজনেই দুজনকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে আগামী বছরের নির্বাচনের স্লোগানটাও উপস্থিত ভারতীয়-আমেরিকানদের তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আবকি বার ট্রাম্প সরকার।’ অর্থাৎ, পরের বছর নির্বাচনে জিতে ট্রাম্পই ফের সরকার গড়বেন। কংগ্রেসের আপত্তি এখানেই। আনন্দ শর্মা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এত বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিদলীয় রাজনীতিতে ভারত কখনো খোলামেলা কারও পক্ষ নেয়নি। এই পররাষ্ট্র নীতি মোদি সরাসরি লঙ্ঘন করলেন।

বিজেপির পক্ষ থেকে কংগ্রেসের এই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন দলের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্য। তাঁর কথায় এই সমালোচনা অর্থহীন ও ভ্রান্ত। ‘হাউডি মোদি’র সাফল্য কংগ্রেসকে দিশেহারা করে দিয়েছে।

হাউসটনের সমাবেশে ট্রাম্পের যোগ দেওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। এই কথা বলে ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, ২০২০ সালের নির্বাচনে টেক্সাসে ডেমোক্র্যাটরা বিরাটভাবে নামতে চলেছে। আগামী বছরের নির্বাচনে ভারতীয়-আমেরিকানদের সমর্থন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে ট্রাম্পের হাঁটাচলা ভারতীয়-আমেরিকান ভোটারদের কতটা প্রভাবিত করবে তা এখনই বলা যাবে না। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ভোটে ৮০ শতাংশ ভারতীয়-আমেরিকান ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করেছিলেন।

‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিরলস লড়াইয়ের ঘোষণাও দেন।