নেতানিয়াহুকে ঠেকাতে গান্টজকে সমর্থন আরব জোটের

ইসরায়েলের মধ্যপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির নেতা বেনি গান্টজ। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের মধ্যপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির নেতা বেনি গান্টজ। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। সরকার গঠনের চেষ্টায় রয়েছে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজ। এর মধ্যে ধাক্কা খেলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইসরায়েলি-আরবদের জোট সমর্থন দিয়েছে নেতানিয়াহুর প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজকে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে সামরিক বাহিনীর সাবেক প্রধান গান্টজকেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম দলগুলোর জোট জয়েন্ট লিস্ট।

জোটের নেতারা বলেছেন, নেতানিয়াহুকে আর ক্ষমতায় দেখতে চান না তারা। ফলে রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে আরেকটি বাধার সম্মুখীন হলেন নেতানিয়াহু।

মঙ্গলবারের দ্বিতীয়বারের নির্বাচনে গান্টজের মধ্যপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি, নেতানিয়াহুর ডানপন্থী লিকুদ পার্টির পরেই জয়েন্ট লিস্টের অবস্থান। ভোটের হিসেবে ইহুদি ধর্মীয় দলগুলোকেও তারা পিছে ফেলে দিয়েছে। ফলে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে ক্ষমতা পরিবর্তনে বড় ধরনের ভূমিকায় চলে আসল ইসরায়েলি-আরবদের এই জোট।

নির্বাচনে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী লিকুদ পার্টি ৩১ আসন ও বেনি গান্টজের মধ্যপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি ৩৩টি করে আসন পেয়েছে। সরকার গঠনের জন্য ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে ৬১টি আসন পেতে হবে। অন্য ছোট ছোট দলের সমর্থন নিয়ে দুটি দলই শেষ পর্যন্ত ৫৫-৫৬টি আসন পাওয়ার চেষ্টা করছে। এখন আরব জোটের ঘোষণায় জয়েন্ট লিস্টের ১৩ আসন যোগ হয়ে গান্টজের জোটের আসন হবে ৪৬। জোটগতভাবেও এগিয়ে থাকল ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি। তবে সরকার গঠনের জন্য আরও ১৫ আসন দরকার গান্টজের। এখন হয়তো বেনি গান্টজ ছোট দলগুলো জোটে ভেড়ানোর চেস্টা করবেন।

দেশটিতে আরব সংখ্যালঘু মুসলিমদের এই জোট ১৯৯২ সালে সর্বশেষ আইজেক রবিনকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল। এরপর গত তিন দশকে তারা ক্ষমতার রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে। বিশেষ করে, অসলো শান্তি চুক্তির ব্যর্থতা, ২০০০ সালের অক্টোবরে ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হওয়া এবং ফিলিস্তিনি আত্মঘাতী হামলাসহ নানা ঘটনায় এই জোটের কর্মকাণ্ড অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল।

গত এপ্রিলে ইসরায়েলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনেও দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। নেতানিয়াহুর দল পেয়েছিল ৩৬ আসন, আর গান্টজের দল পেয়েছিল ৩৫ আসন। ৯ এপ্রিলের সেই নির্বাচনে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় দফায় সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। ইসরায়েলের ইতিহাসে এই প্রথম এক বছরে দুবার সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ঘটনা ঘটল।