'মুলা' ঝোলানো ইমরান খানের ব্যঙ্গচিত্র, পত্রিকার ক্ষমা প্রার্থনা

ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পরই ‘দ্য নেশন’ ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ছবি: টুইটার
ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পরই ‘দ্য নেশন’ ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ছবি: টুইটার

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিয়ে বিদ্রূপ করে একটি ব্যঙ্গচিত্র ছেপে বিপাকে পড়ে দেশটির একটি জাতীয় দৈনিক। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ে দেশটির জাতীয় পত্রিকা ‘দ্য নেশন’ ক্ষমা চেয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে চলমান কাশ্মীর সংকট সমাধানে ইমরান খানের চেষ্টাকে ব্যঙ্গ করেই পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য নেশন’ গত বুধবার ব্যঙ্গচিত্রটি প্রকাশ করে। ব্যঙ্গচিত্রে ইমরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও দেখা যায়। ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পরদিন গত বৃহস্পতিবার ‘দ্য নেশন’-এর পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

টুইটারে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ওই ব্যঙ্গচিত্রটি আমাদের মানের ছিল না। এটির মাধ্যমে আমাদের সম্পাদকীয় নীতিও প্রতিফলিত হয়নি। এটা প্রকাশ করা একেবারেই উচিত হয়নি। আমরা দেশের পক্ষের পত্রিকা এবং এ জন্য সব সময়ই গর্বিত থাকি। ওই ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে যে বক্তব্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, সেটাও যথাযথ নয়, বিশেষ করে এমন একটি সময়ে যখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলছে। এ কাজের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

ওই ব্যঙ্গচিত্রে দেখা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি একটি টানা গাড়িতে পাশাপাশি বসে আছেন। গাড়িটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ইমরান খান। ট্রাম্পের হাতে একটি বড় ছিপ, যেটির মাথায় একটি গাজর (অনেকটা মুলা ঝোলানোর মতো) ঝোলানো আছে। ট্রাম্প গাজরটি ইমরানের সামনে ঝুলিয়ে রেখেছেন। ইমরান সেটির লোভে গাড়িটি টেনে নিয়ে দৌড়ে চলছেন। এ সময় ইমরান মনে মনে কাশ্মীর সংকটের সমাধান হবে বলে কল্পনা করছেন।

কাশ্মীর সংকট সমাধানে ইমরান খানের নানান চেষ্টাকে ব্যঙ্গ করেই পাকিস্তানের ‘দ্য নেশন’ পত্রিকা এ ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। ছবি: টুইটার
কাশ্মীর সংকট সমাধানে ইমরান খানের নানান চেষ্টাকে ব্যঙ্গ করেই পাকিস্তানের ‘দ্য নেশন’ পত্রিকা এ ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। ছবি: টুইটার

গত ৫ আগস্ট বিজেপিশাসিত নরেন্দ্র মোদির সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে কেন্দ্রশাসিত দুইটি আলাদা অঞ্চলে ভাগ করার ঘোষণা দেয়। এর পরই কাশ্মীরে নিরাপত্তার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় ভারত। বিশেষ মর্যাদা রোধের পর বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়তে পারে, এ আশঙ্কায় কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়ে কারফিউ জারি করে মোদি সরকার। রাজ্যর সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দীও করা হয়। স্থানীয় অনেক রাজনীতিবিদ এখনো হয় গৃহবন্দী না হয় কারাবন্দী।

তবে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে এবং যোগাযোগ-ব্যবস্থাও ঠিকমতো চলছে।

৫ আগস্টের পরই কাশ্মীর সংকট নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ট্রেন ও বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় ইমরানের সরকার। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও সংস্থার কাছে বলেছেন, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের জন্য সমস্যা হচ্ছে এবং তা সমাধানে তিনি সাহায্য কামনা করেছেন।