তেলের দাম অকল্পনীয়ভাবে বাড়ানোর হুমকি সৌদির

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্সের ফাইল ছবি
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্সের ফাইল ছবি

ইরানকে নিরস্ত করতে বিশ্ব এক না হলে তেলের দাম অকল্পনীয়ভাবে বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। গতকাল রোববার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তিনি সামরিকবাহিনীর হস্তক্ষেপের বদলে রাজনৈতিক সমাধান শ্রেয় বলে জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের টিভি চ্যানেল সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিট’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার দায়ও নিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ। ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে বিয়েসংক্রান্ত কিছু কাগজ আনতে গিয়েছিলেন। এরপর সেখানেই তিনি খুন হন। ওই ঘটনার পর যুবরাজ সালমান বিশ্বব্যাপী কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘দ্য ক্রাউন প্রিন্স অব সৌদি অ্যারাবিয়া’ নামের ডকুমেন্টারিতে পিবিএসের মার্টিন স্মিথকে খাসোগি হত্যা নিয়ে বলেছেন, ‘এটা আমার জ্ঞাতসারে হয়েছে। এর দায় আমার ওপর বর্তায়, কারণ ঘটনাটি আমার জ্ঞাতসারেই হয়েছিল।’ খাসোগির মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে ওই ডকুমেন্টারি আগামী ১ অক্টোবর সম্প্রচার করা হবে।

যুবরাজ সালমান বলেন, ‘বিশ্ব যদি ইরানকে নিরস্ত করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরাও এমন পদক্ষেপ নেব যা বিশ্ব স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এতে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হবে। তেলের দাম এমনভাবে বাড়বে যা আগে কেউ দেখেনি।’

মঙ্গলবার সৌদি আরবে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুবরাজ জানিয়েছিলেন, ১৪ সেপ্টেম্বরের হামলার ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে তিনি একমত। এ হামলায় বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈশ্বিক বাজারে তেলের সরবরাহ প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। তবে তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তাঁরা।

ওই হামলার পরপরই দায় স্বীকার করেছে ইরানপন্থী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তবে এই দাবি নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলো এবং সৌদি আরব। হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করছে তারা। ইরান অবশ্য শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

সালমান বলেন, ‘রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান সামরিকবাহিনীর হস্তক্ষেপের চেয়ে অনেক ভালো।’

যুবরাজ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করা। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তি করে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে জোর দেন তিনি।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দুজনকে একত্রে আনার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর বেরিয়ে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে তেহরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।