নতুন প্রস্তাব না মানলে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট

চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকর করতে নতুন প্রস্তাব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। আজ বুধবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি এ প্রস্তাবকে গঠনমূলক ও উভয় পক্ষের জন্য ন্যায্য বলে দাবি করেন।

ম্যানচেষ্টারে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পাঁচ দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিন ছিল আজ। এদিন দলের নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো সম্মেলনে বক্তব্য দেন বরিস জনসন। বিতর্কিত ‘বেক স্টপ’-ব্যবস্থা বাদ দিয়ে নতুন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান বরিস। বিতর্কিত ‘বেক স্টপ’ শর্তের কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তি তিন দফা প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে অনেক আলোচনা-পরামর্শের পর নতুন প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইইউর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আবারও জোর দিয়ে বরিস বলেন, ইইউ চুক্তিতে রাজি না হলেও যুক্তরাজ্য আর ব্রেক্সিট পেছানোর আবেদন করবে না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত গণভোটের রায়ের বাস্তবায়ন করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যাঁরা ব্রেক্সিটের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন, সবাই দ্রুত এই বিতর্কের অবসান চান। তিনি বলেন, কেবল ব্রেক্সিটের রায় কার্যকর করার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সৃষ্ট বিভক্তি দূর করে জাতিকে আবার ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব।

বুধবারই প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউর কাছে উত্থাপন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইইউ নতুন প্রস্তাবে রাজি না হলে ৩১ অক্টোবর চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করবে যুক্তরাজ্য। কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান জেমস ক্লেভারলি বলেন, যুক্তরাজ্য বাস্তবতা মেনে ছাড় দিয়েছে। এবার ইইউর পালা।

এদিকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত করতে না পারলে বিচ্ছেদ পেছানোর আবেদন জানাতে আইন প্রণয়ন করেছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট। বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের বিরোধী আইনপ্রণেতাদের আশঙ্কা, সরকার কোনো কৌশলে এই আইন অমান্য করবে এবং চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের পথে হাঁটবে। যে কারণে বিরোধী দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেছে। কিন্তু বরিসের পতন ঘটলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত বিরোধীরা। যে কারণে থমকে আছে অনাস্থা প্রস্তাবের উদ্যোগ।

প্রধান বিরোধী দল লেবারের ছায়া অর্থমন্ত্রী জন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। কেননা, গণতন্ত্রে এটাই নিয়ম। কিন্তু লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি করবিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানতে নারাজ। তারা সবার সমর্থন পাবে এমন পেছনের সারির কোনো আইনপ্রণেতাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী করতে চায়।

লেবার পার্টি বলছে, ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ইইউ সম্মেলনের আগে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা নেই তাদের।