সম্পত্তি নিজামের পাকিস্তানের নয়, ব্রিটিশ আদালতে জয় ভারতের

হায়দরাবাদের নিজামের সম্পদ নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক রায়ে জয় পেয়েছে ভারত। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, হায়দরাবাদের নিজামের সম্পদে একমাত্র অধিকার ভারতের। অনেক দিন ধরে চলা এ মামলায় পাকিস্তানের দাবিতে তাঁরা সায় দিতে পারছেন না।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ৭০ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ে ফল মিলল গতকাল বুধবার। ব্রিটেনের হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, পাকিস্তানের এই সম্পত্তির ওপর কোনো ধরনের অধিকার নেই। এর পূর্ণ মালিকানা নিজাম ওসমান আলি খানের বংশধরদের। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রায়ের পূর্ণ বিবরণ জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তারা।

ব্রিটেনের আদালতের এ রায়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আঙিনায় আরেকবার ভারতের কাছে পিছিয়ে পড়ল। বুধবার ব্রিটেনের হাইকোর্ট এক রায়ে জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানের এই সম্পত্তির ওপর কোনো অধিকার নেই। এর পূর্ণ মালিকানা ওসমান আলি খানের বংশধরদের।

ভারত ও পাকিস্তান আলাদা হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম ওসমান আলি খান ব্রিটেনে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনারের কাছে গচ্ছিত রাখেন ১ কোটি ৭ হাজার ৯৪০ পাউন্ড এবং ৯ শিলিং। সেই অর্থ এত দিনে (২০১৯ সালে) বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ কোটি পাউন্ডে।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর লন্ডনের একটি ব্যাংকে নিজামের গচ্ছিত অর্থের দাবি জানিয়ে ব্রিটিশ আদালতে দাবি জানিয়েছিল পাকিস্তান। এ ইস্যুতে মামলা করে হায়দরাবাদের নিজামের পরিবার।

নিজামের দুই উত্তরসূরি মোকাররম ঝাহ (হায়দরাবাদের অষ্টম নিজাম) ও তাঁর ছোট ভাই মোফাখম ভারতের সঙ্গে হাত মেলান। এরপরই তাঁরা দাবি করেন যে এই সম্পত্তি তাঁদের। পাল্টা দাবি জানিয়ে পাকিস্তান বলে, ন্যায়ত এই সম্পত্তি তাদের। বর্তমানে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ রক্ষিত আছে লন্ডনের ন্যাশনাল ওয়েস্ট মিনস্টার ব্যাংকে।

লন্ডনের রয়্যাল কোর্ট অব জাস্টিসের বিচারক মার্কাস স্মিথ তাঁর রায়ে বলেছেন, সপ্তম নিজাম ওই সম্পত্তির অধিকারী। ফলে ভারত সরকার এবং যুবরাজ এ সম্পদের অধিকারী। তিনি আরও জানান, কোনোভাবেই পাকিস্তান ওই সম্পত্তির দাবিদার হতে পারে না। পাকিস্তান সম্পদের সমর্থনে কোনো তথ্যপ্রমাণ আদালতে হাজির করতে পারেনি। দুই যুবরাজ এবং ভারতের অধিকার রয়েছে এ অর্থ গ্রহণ করার।

যুবরাজদের আইনজীবী পল হুইট বিবিসিকে বলেন, আদালত আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে এ অর্থ সরাসরি পাকিস্তানের হাতে হস্তান্তর করার কোনো কারণ নেই। এ অর্থ আসলে নিজামেরই।

হুইট আরও বলেন, এ মামলা যখন শুরু হয়েছিল যখন আমার মক্কেল শিশু ছিল। আর আজ যখন রায় হলো তখন তিনি ৮০-র ঘরে।

নিজামের এক নাতি নাজফ আলি খান বিবিসি তেলেগুকে বলেন, ‘আমরা বিচারপতি মার্কাস স্মিথের রায়কে স্বাগত জানাই। আদালত পাকিস্তানের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। পরিবার দীর্ঘকাল এই রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।’

বুধবারের রায় নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রায়ের পূর্ণ বিবরণ জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে দেশটি। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘হায়দরাবাদকে ভারতের অবৈধভাবে অধিকার করার’ বিষয়টি স্থান পায়নি এই রায়ে।