দেশে ফিরছে সাগরভাসা বাংলাদেশি কিশোর ইমরান

ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত

ট্রলারে করে মাছ ধরা দেখতে গিয়ে সমুদ্রে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশি কিশোর ইমরান খান (১৪) দেশে ফিরছে। গত আগস্ট মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গে থাকা ইমরানকে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বাংলাদেশ উপহাইকমিশন।

আগস্ট মাসের ২৬ তারিখে ট্রলার এফবি ইমরানে করে ১২ জন জেলের সঙ্গে মাছ ধরা দেখতে এসেছিল ইমরান। স্কুলছাত্র ইমরান পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শখ করে ওই ট্রলারে গিয়েছিল। বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় দড়িবাঁধা বালতি দিয়ে সাগর থেকে পানি তোলার সময় সে পড়ে যায়। উত্তাল সাগর থেকে উদ্ধার করা যায়নি তাকে। ট্রলারও স্রোতের টানে ভেসে যায়। এরপর দুদিন সাগরে ভাসতে ভাসতে ইমরান চলে আসে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র সীমানায়।

৩১ আগস্ট ভারতীয় ট্রলার ‘এফবি বাবা পঞ্চাননের’ চালক মনোরঞ্জন দাস সমুদ্রে মাছ ধরার সময় দেখতে পান একজন মানুষ সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে। তিনি তখন ইমরানকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারের পর ইমরান জানায়, সমুদ্রে পড়ে যাওয়ার পর ঢেউ ও স্রোতে দুদিন ভাসতে থাকে সে। শুধু সমুদ্রের পানি খেয়ে বেঁচে ছিল। ভারতীয় মৎস্যজীবীরা তাকে উদ্ধার করে জামাকাপড় ও খাবার দেন।

এরপর ভারতীয় মৎস্যজীবীরা ইমরানকে নিয়ে আসেন ডায়মন্ড হারবার মহকুমার রায়দীঘি বন্দরে। সেখানে এনে তাকে ভর্তি করা হয় গ্রামীণ হাসপাতালে। রায়দীঘি ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে।

ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা প্রশাসক সুকান্ত সাহা জানিয়ে দেন, আইনি প্রক্রিয়ায় ইমরানকে দেশে ফেরানো হবে।

এরপর আদালতের নির্দেশে ইমরানকে পাঠানো হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার লক্ষ্মীকান্তপুরের নূর আলী হোমে। সেখানেই মাসখানেক হোমে থেকে দেশে ফেরার দিন গুনছিল ইমরান। হোম কর্তৃপক্ষ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রচেষ্টায় অবশেষে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।

ইমরানের বাড়ি বাংলাদেশের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার চরদোয়ানি গ্রামে। সে স্থানীয় চরদোয়ানি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

ঢাকার মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন নূর আলী হোমে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেছেন, ইমরানকে দেশে ফেরানোর সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইমরান ফিরে যাচ্ছে দেশে।

ইমরান বলেছে, পরিবার তার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।