কাল ভারতে আসছেন চীনের প্রেসিডেন্ট

সি চিন পিং, নরেন্দ্র মোদি
সি চিন পিং, নরেন্দ্র মোদি

অবশেষে চীন জানাল, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভারতে আসছেন। সফর শুরুর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এই ঘোষণা বিস্ময়করই শুধু নয়, কেন তারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছিল, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা শুরু হয়েছে। দুই দিনের সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ে আসছেন আগামীকাল শুক্রবার।

সফরের যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত হওয়া সত্ত্বেও বেইজিং থেকে এই বিষয়ে কিছু ঘোষণা করা হচ্ছিল না। অবশেষে সফর শুরুর ঠিক দুই দিন আগে, গতকাল বুধবার তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সি চিন পিংয়ের সফরসূচি ঘোষণা করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে এই সফর হলেও দুই নেতার আলোচনা হবে বেসরকারি পর্যায়ে। ফলে কোনো দেশ কোনো বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ যেমন হবে না, তেমনই কোনো যৌথ বিবৃতি জারির সম্ভাবনাও কম। ২০১৮ সালে চীনের ইউহান শহরে মোদি-সি প্রথম বেসরকারি বৈঠক হয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করবেন।

চেন্নাইয়ে সি চিন পিং আসবেন কি না, তা নিয়ে শেষ পর্যন্ত একটা সংশয় ছিল। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত চীনকে অবশ্যই বিস্মিত করেছিল। সেই কারণে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও রাজ্য দ্বিখণ্ডিত করার পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চীনে গিয়ে তাঁদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়ে এসেছিলেন। কাশ্মীর প্রশ্নে চীন দৃঢ়ভাবে জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে দুই দেশকে বিবাদ মেটানোর পক্ষে মত দিয়েছিল। কিন্তু তারপর চীন তার অবস্থান বদলায়।

কোনো চীনা নেতার ভারত সফর এভাবে শেষ মুহূর্তে কখনো চূড়ান্ত হয়নি। চীনের তরফে এই দোলাচলের সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমেই তিক্ত হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর প্রশ্ন সামনে রেখে ভারতে বাড়তি গুরুত্ব পেতে চীন আগ্রহী বলে কোনো কোনো মহল মনে করছে। সি চিন পিংয়ের সাধে​র বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে ভারত এখনো রাজি হয়নি।

সি চিন পিংয়ের চিন্তা রয়েছে ৫-জি নিয়েও। নিরাপত্তাজনিত কারণে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়েকে ৫-জি ট্রায়ালে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়ে ভারত এখনো দ্বিধাগ্রস্ত। এ বিষয়ে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল চাপ যেমন রয়েছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ চাপও যথেষ্ট। এই বৈঠকে এই বিষয়েও সি নিশ্চিন্ত হতে চাইবেন বলে মনে করা হচ্ছে।